জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধিত বিল পাস হয়েছে। এর ফলে নির্বাচনে অনিয়ম হলে কিছু কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে পারলেও পুরো আসনের ভোটের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৩’ উত্থাপন করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলটি পাসের সময় জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী দলের সদস্যরা এর ওপর আপত্তি করেন। তারা দাবি করেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদকে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
অনিয়মের অভিযোগ পেলে পুরো আসনের ভোট স্থগিত কিংবা বাতিল করার ক্ষমতা এতদিন ভোগ করে আসছিল নির্বাচন কমিশন। গত বছরের অক্টোবরে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট স্থগিত করে আলোচিত হয়েছিল বর্তমান কমিশন। এজন্য বিধানটি বহাল রাখার প্রস্তাব করেছিল ইসি। যা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনাও হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ইসির ক্ষমতা কমিয়ে সংসদে পাস হলো বিল।
গত ৫ জুন আরপিও সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তখন জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম তাতে আপত্তি জানালে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলটি পাসের সময় জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী দলের সদস্যরা এর ওপর আপত্তি করেন। তারা দাবি করেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদকে জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
এর আগে জাতীয় সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়। সেসময় কমিটির সদস্যরা জানান, উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি পাসের সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর কোনো আসনের পুরো ফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর তদন্তসাপেক্ষে ফলাফল বাতিল করে ওই সব কেন্দ্রে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।
এছাড়া সংশোধিত আরপিওতে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা গণমাধ্যমকর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির সরকারি সেবার বিল পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আগে মনোনয়ন দেওয়ার সাত দিন আগে এসব ঋণ পরিশোধ করতে হতো।