পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হালিম মৃধা (৪৫) নামে এক ঠিকাদার পুলিশের তাড়া খেয়ে তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয়েছে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত একটার দিকে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজনগর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
আদালতে একটি চেক ডিজনার মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন তিনি। নিহত ঠিকাদার মঠবাড়িয়া পৌরশহরের সবুজনগর এলাকার আব্দুল মন্নান মৃধার ছেলে।
এদিকে রাত দেড়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল হতে নিহত ঠিকাদারের লাশ উদ্ধার করে আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, ঠিকাদার হালিম মৃধার সাথে অপর এক ঠিকাদার মো. নূরুজ্জামান এর টাকা পয়সা লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় ঠিকাদার নূরুজ্জামান আদালতে ঠিকাদার হালিম মৃধার বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ বুধবার দিনগত রাত একটার দিকে আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চালায়। এ সময় হালিম একই এলাকার বসবাসরত তার বোন রুমি বেগম এর নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন। পুলিশ গোপনে সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদার হালিম তিনতলা ভবনের ছাদে উঠে যায়। পুলিশও ভবনের ছাদে দিকে তাকে তাড়া করে। এ সময় হালিম পুলিশের হাত থেকে বাচার জন্য লাফিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
নিহত ঠিকাদার হালিম মৃধার মেজ ভাই মামুন মৃধা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ রাত দেড়টার দিকে আমার বাসায় এসে আমাকে জোর জবরদস্তি করে বলে আপনার বোনের বাসার পিছনে কি যেন পড়ার শব্দ হইছে। এক প্রকার টেনে হিচড়ে পুলিশ আমাকে বোনের বাসার সামনে নিয়ে যায়। এ সময় ভবন থেকে নুরুজ্জামান তালুকদার ও অপরিচিত দুই ব্যক্তিকে সিড়ি দিয়ে নামতে দেখি। পুলিশ আমাকে ভবনের পিছনে নিয়ে যায়। সেখানে বেড়ের (নালা) ভেতর ভাইয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় ভাইয়ের হাত পা ভাঙা ও মুখমন্ডে রক্ত জখম দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে তাড়া করে তিনতলা ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ হতে একটি হত্যা মামলা দায়েরের চেষ্টা চলছে।
মঠবাড়িয়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ঠিকাদার মামুন এর লাশ ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত ঠিকাদারের নামে দুইটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। ঘটনার সময় টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা যেতে পারে। অন্য কোন ঘটনা থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যবে।