মালয়েশিয়ায় জোরপূর্বক শ্রমের প্রতিকারে নিজ থেকেই সহজ পথ অবলম্বনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন শ্রম অধ্যুষিত পেনাং রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী পি রামাসামি। গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এই পরামর্শ প্রদান করেন।
দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জোর-জবরদস্তির শ্রম সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে (আইএলও) দায়িত্ব না দিয়ে নিজেদেরকে সমস্যাটির সমাধান করতে হবে।
মালয়েশিয়ায় জোরপূর্বক শ্রম ইস্যুটি সম্প্রতি খুব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে পি রামাসামি বলেন, আমেরিকা দূতাবাস বা আইএলও-এর মালয়েশিয়ায় শ্রম চর্চার বিষয়ে তদন্ত করা বা হস্তক্ষেপ করা নয়; এটি মূলত মালয়েশিয়ার সরকার ও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, জোরপূর্বক শ্রমের অভিযোগ দূর করার জন্য বিদেশি বা আন্তর্জাতিক সংস্থার উপর নির্ভর করা খুব ভালো কিছু হবে না। মন্ত্রী সারাভানানের উচিৎ; কেন জোরপূর্বক শ্রম বিদ্যমান তা খুঁজে বের করা।
গত সপ্তাহের শুরুর দিকে সারাভানান আইএলও এবং মালয়েশিয়ার মার্কিন দূতাবাসকে বলপূর্বক শ্রমের যে কোনো তদন্তের বিষয়ে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলেছিল। যেন মালয়েশিয়ার পণ্যগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার আগে সমাধানের পথ খুঁজে বেড় করা যায়।
সারাভানান বলেছেন, মালয়েশিয়ার বেশকিছু পণ্য বাধ্যতামূলক শ্রমের অভিযোগের কারণে মার্কিন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) এজেন্সি দ্বারা রফতানি নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো প্রতিবেদন পায়নি; ফলে কাজ করা বর্তমানে আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
অপর দিকে মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রামাসামি বলেছেন, মার্কিন দূতাবাস এবং আইএলও-এর কাছে সহায়তা চাওয়ায় এই ইঙ্গিত দেয় যে- জোরপূর্বক শ্রমের ইস্যুটি পদ্ধতিগতভাবে তদন্ত করার জন্য নিজ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রীর প্রশাসনিক ক্ষমতার অভাব রয়েছে। মন্ত্রণালয় মনে করে জোরপূর্বক শ্রম এমন কিছু যা কার্যকর প্রয়োগকারী পদক্ষেপের সাথে নিয়োগকারীদের মনোভাব পরিবর্তনের মাধ্যমে নির্মূল করা যেতে পারে।
এ দিকে গত সপ্তাহে সারাভানানের দেওয়া এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গত শুক্রবার (২২ এপ্রিল) কুয়ালালামপুরে মার্কিন দূতাবাস বলেছে, আমরা জোরপূর্বক শ্রম সংক্রান্ত বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে।
অপর দিকে জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে শ্রম এবং মানব পাচারের চলমান অভিযোগের মধ্যেই নতুন করে শ্রম নিয়োগের জন্য বাংলাদেশের সাথে মালয়েশিয়ার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ চুক্তি সম্পন্ন হলেও অদ্যাবধি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ শুরু করেনি মালয়েশিয়া সরকার।
মালয়েশিয়া সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ একাধিকবার বলেছিলেন, আমরা ২০০৬/০৭ সালের মতো অতিরিক্ত বাংলাদেশি কর্মী এনে ডাম্পিং গ্রাউন্ড করতে চাই না। এবার কর্মী প্রেরণ ও নিয়োগে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি এবং নিয়োগকর্তা সঠিক দায় দায়িত্ব পালনের দিকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।