মিয়ানমারের পাথেইন জেলার সমুদ্র সৈকতে ১৪ জন রোহিঙ্গার মরদেহ ভেসে এসেছে সোমবার। পাথেইন জেলা পুলিশের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুন শোয়ে এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তুন শোয়ে বলেন, কয়েক দিন আগে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল থেকে ৫০ জনের একটি রোহিঙ্গা দল সমুদ্রপথে প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশে একটি নৌকায় উঠেছিল। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই সেই নৌকা ডুবে যায় এবং ১৫ জন সাগরে ডুবে মারা যান।
‘মৃতদের মধ্যে ১৪ জনের মরদেহ সৈকতে ভেসে এসেছে। বাকি ১ জন এখনও নিখোঁজ। এছাড়া ওই নৌকার মালিকসহ ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।’
ভেসে আসা এসব মৃতদেহের মধ্যে ১২ জনই নারী এবং ২ জন কিশোর।
মিয়ানমারের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুন থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত পাথেইন জেলা। সেখানকার একজন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, ডুকে যাওয়া নৌকাটিডে যেসব যাত্রী ছিলেন, তারা সবাই মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইনের বুথিডং, মাউংডাউ এবং সিটওয়ে শহরের বাসিন্দা। কয়েকদিন আগে মিয়ানমার ত্যাগ করে মালয়েশিয়াগামী ওই নৌকায় উঠেছিলেন তারা।
রোববার থেকেই পাথেইনের সৈকতে মৃতদেহ ভেসে আসতে শুরু করে। রোববার মোট ৮ জনের মৃতদেহ ভেসে এসেছিল বলে এএফপিকে জানিয়েছেন ওই অধিকারকর্মী।
বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জাতিগোষ্ঠীদের মধ্যে রোহিঙ্গারা অন্যতম। মিয়ানমারের সংবিধানে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। দশকের পর দশক ধরে মিয়ানমারে রাজনৈতিক ও সামজিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এই জাতিগোষ্ঠী।
এর মধ্যে গত ২০১৭ সালে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে রোহিঙ্গাদের ওপর। আরাকানে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় রোহিঙ্গাদের দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। অভিযানের অংশ হিসেবে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর লুটপাট করা হয় এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা ও ধর্ষণ করে মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা।
সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। এছাড়া দেশ থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য তাদের অন্যতম পছন্দের দেশ মালয়েশিয়া। কাজের সুযোগ থাকায় বর্তমানে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আছেন মালয়েশিয়ায় এবং তাদের ৯০ শতাংশেরও বেশি দেশটিতে প্রবেশ করেছেন সমুদ্রপথে, অবৈধভাবে।পূর্ব পশ্চিম