মুরাদনগরের আলোচিত ট্রিপল মার্ডার, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মাদকের বিরুদ্ধে নারী-শিশুদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার কড়ুইবাড়িতে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে একই পরিবারের মা, ছেলে ও মেয়ের গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম। এই ঘটনার ১মাস ৮ দিন পর ক্রীড়া উপদেষ্টার পরিবারকে জড়িয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ,মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১১ আগস্ট) উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক হাজার নারী- শিশু মানববন্ধনে অংশ নেয়। মানববন্ধন অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিলো বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত নানা রঙের প্লেকার্ড। এ সময় হাজারো নারী-শিশুর স্লোগানে মুখরিত হয় রাজপথ। বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের স্লোগান ছিলো – ‘মাদক কারবারিদের ঠিকানা কড়ইবাড়িতে হবে না’ মাদক কারবারিদের ধরে দাও ধরে ধরে জেলে দাও, আসামীদের মুক্তি দাও নয়তো আমাদের জেলে দাও, জনতার রোষে নয় আইনের শাসন চাই, বিচারহীনতা নয় ন্যায় বিচার চাই, নির্দোষ এলাকাবাসীর মুক্তি চাই, মাদক কারবারি নিপাত যাক এলাকাবাসী মুক্তি পাক, আইনের সঠিক প্রয়োগ চাই, মাদকের শিকড় উপড়ে ফেলো, প্রতিবাদীদের নয় অপরাধীদের ধরো, ক্রীড়া উপদেষ্টা পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মানি না মানবো না।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকাটীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্হানীয় আকলিমা বেগম, জান্নাত আক্তার, শিউলি বেগম, নাসিমা বেগমসহ আরো অনেকে। এসময় বক্তারা বলেন, মাদক সম্রাজ্ঞী রুবি দুই যুগ ধরে মাদকের আস্তানা গড়ে ছিল কড়ইবাড়ি এলাকায়। কেউ বাঁধা দিলে তাদের হুমকি ধামকি ও মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখত। গেল ৩ জুলাই মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে, দীর্ঘদিনের ক্ষোভে গণপিটুনিতে নিহত হয় রোকসানা বেগম রুবি (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার(২৯)।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে বলেন, গণপিটুনির ঘটনায় মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেফতার আতঙ্কে আমাদের পুরো এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের এলাকায় চুরি, ডাকাতি সহ অপরাধ প্রবনতা বেড়েছে কয়েকগুণ। পরিবারের উপার্জনক্ষম পুরুষ সদস্যরা এলাকায় না আসতে পারায় পরিবারের নারী-শিশুরা না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আতঙ্কে রাতের আধাঁরে ঘুমাতে পারি না। প্রতিদিন পুলিশের লোক পরিচয়ে অপরিচিত লোকজন বাড়িতে এসে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
এছাড়াও ঘটনার এক মাস আট দিন পর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে ক্রীড়া উপদেষ্টার পরিবারকে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়ানো হচ্ছে । উপদেষ্টার পরিবার রুবিকে চিনে না এবং তাদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। তবুও একটি মহল তাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উপদেষ্টার পরিবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলী। আমরা এর সুষ্ঠ তদন্তের দাবীতে মানববন্ধন করছি । মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেফতার বন্ধ করা না হলে কড়ইবাড়ি সহ পুরো এলাকার নারী শিশুরা কঠোর আন্দোলন ও রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।