Wednesday , 24 April 2024
শিরোনাম

মোবাইলে প্রেম করে তৃতীয় বিয়ে, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা

মোবাইল ফোনে পরিচয়। পরিচয় থেকে প্রেম ও পরে বিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মণি আক্তারকে (২২) যৌতুকের দাবিতে পিটিয়ে হত্যা করে পাষণ্ড স্বামী মো. সুমন (৩৫)।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দাঁতমারায় গত বছরের ৩১ অক্টোবর রাতে মণিকে হত্যা করতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। এ ঘটনায় ভুজপুর থানায় মণির বড় ভাই মো. আব্বাস বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।

ওই মামলার সূত্র ধরে ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর র্যা ব ৭-এর হাটহাজারী ক্যাম্পের সদস্যরা গত শনিবার ভোরে নগরীর বায়োজীদ থানাধীন চন্দ্রনগর এলাকার কলাবাগানস্থ জেডএ আবাসিক এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করে।

সুমন ভুজপুর থানার বাদুরখিল এলাকার বোছা মিয়ার বাড়ির আবুল কাশেমের পুত্র। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন তার স্ত্রী মণি হত্যার বর্ণনা দেয়।

রোববার সকালে সুমনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যা ব-৭ হাটহাজারী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত এসপি মো. মাহফুজুর রহমান।

তিনি বলেন, সুমন প্রায় আট বছর আগে প্রথম বিয়ে এবং বছর দুয়েক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এদের প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তাদের বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। এসব তথ্য গোপন করে সুমন বছর দেড়েক আগে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে মণি আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে তাকে বিয়ে করে।

যদিও বছর না ঘুরতেই যথারীতি সুমন বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকার জন্য মণিকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সংসার টিকানোর লক্ষ্যে মণির পরিবারের লোকজন সুমনকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেয় এবং ৫০ হাজার টাকা দেয়। এ ছাড়া স্বামীর যৌতুকের চাহিদা মেটানোর জন্য মণি নিজেও চা বাগানে চাকরি করত।

আসামিদের বরাত দিয়ে র্যা ব জানায়, গত বছরের ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যায় সুমন যৌতুকের জন্য মণি আক্তারের বাবার কর্মস্থলে আসে এবং পুনরায় যৌতুকের দাবিকৃত টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মণির দরিদ্র পিতা টাকা দিতে না পারায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীকে নিয়ে বন্ধু টিপুর মোটরসাইকেলযোগে রওনা দেয়।

এ সময় কেন যৌতুকের টাকা আনতে পারল না এই নিয়ে মোটরসাইকেলে বসেই সুমন তার স্ত্রী মণির সঙ্গে তর্কাতর্কি ও গালাগাল করতে থাকে।

একপর্যায়ে তারা ভুজপুর থানাধীন কালিকুঞ্জ নামক স্থানে এলে বাম চোখ নষ্ট করে ফেলে ও দুই হাত দুই পা মুচড়ে ভেঙে ফেলে। এর পর ইট দিয়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে মোটরসাইকেলের গরম সাইলেঞ্জার পাইপের সঙ্গে বুক চেপে ধরে পুড়িয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।

পাষণ্ড সুমন ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মণিকে প্রথমে নাজিরহাট সরকারি হাসপাতালে নেয়। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে আত্মগোপনে চলে যায়। এর মধ্যে দীর্ঘ ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মণি না ফেরার দেশে পাড়ি জমায়।

বর্তমানে গ্রেফতারকৃত সুমনকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অফিসার ইনচার্জ ভুজপুর থানা বরাবরে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যা ব।

Check Also

কয়রায় নীতি সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধান কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণ

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ খুলনার কয়রায় ইউনিয়ন পরিষদ জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা ভিত্তিক (সিএসও) নেটওয়ার্ক সদস্যদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x