আর্থিক অনিয়ম, বৈদেশিক অনুদান নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা আনা ও নানা অসঙ্গতির কারণে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অধিকারের লাইসেন্স নবায়ন হয়নি বলে জানিয়েছে এনজিও ব্যুরো বাংলাদেশ।
সরকারি এই সংস্থার দাবি, অধিকার নামের সংস্থাটি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য, কর্মরত ব্যক্তি, চলমান প্রকল্পের তালিকা নিয়মিত এনজিও বিষয়ক ব্যুরোকে দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ‘অধিকার’ গত ৭ বছরে তা করেনি।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলাদেশ জার্নালের হাতে এসেছে। এতে এনজিও ব্যুরো বেসরকারি সংস্থাটির নবায়ন বাতিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছে।
চিঠি সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অধিকার’ ১৯৯৫ সালের ২৫ মার্চ এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধন পায়। প্রতিষ্ঠানটি দেশের আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত ত্রৈমাসিক ও বাৎসরিক প্রতিবেদন তৈরি করে বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী এবং পশ্চিমা দেশসমূহের দূতাবাসসমূহে পাঠিয়ে থাকে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ অধিকারের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে নিজেদের প্রতিবেদন তৈরি করে। সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মন্তব্য ও বিবৃতি প্রচার করলেও অধিকার কর্তৃক প্রচারিত প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা এবং তথ্যের উৎসের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
‘অধিকার’ এর তরফ হতে ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধন নবায়নের জন্য আবেদন জমা দেয়া হয়। বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবকমূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন অনুসারে যেকোনো এনজিওর পুনঃনিবন্ধন আবেদন যাচাই বাছাইয়ের সময়ে এনজিওটির পূর্ববর্তী ১০ বছরের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার ভিত্তিতে সেটি সন্তোষজনক কিনা তা নির্ধারণ করা হয়।
অধিকার সংস্থাটি বড় ধরনের বিতর্কের জন্ম দেয় ২০১৩ সালে ৫ ও ৬ মে ঢাকার মতিঝিলে হেফাজতের কর্মী সমর্থকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহতের তালিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে। ১০ জুন অধিকার এই সংক্রান্ত বিষয়ে এক ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং রিপোর্ট তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে যেখানে দাবি করা উক্ত সংঘর্ষে হেফাজতের ৬১ জন কর্মী সমর্থক নিহত হয়েছে।
কিন্তু পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রাথমিক তদন্তে ওই রিপোর্টে নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ অসঙ্গগতি পাওয়া যায়। এরমধ্যে ৫ জন ব্যক্তির নাম একাধিকবার থাকা, ১১ টি কল্পিত নাম সংযুক্ত করা ও শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারীর নাম তালিকায় খুঁজে পায়। এছাড়াও ঢাকার বাইরে মৃত্যুবরণ করা ৬ জনের নাম উক্ত তালিকায় পেয়েছিল দেশের গোয়েন্দা সংস্থা।
অধিকার সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং মূল কর্ণধার আদিলুর রহমান খান। তিনি অক্টোবর ২০০১ মে ২০০৭ পর্যন্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।