লোকমান আনছারী ,রাউজান প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন ডাকাত-স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র্যাব-৭। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েন ও সোনা বিক্রির নগদ ৩০ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুসা, সাইদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুল, খোরশেদুল আলম, সাজ্জাদ হোসেন, মো. বাপ্পি, সজল শীল, মো. ইদ্রিস প্রকাশ কাজল ও বিপ্লব চন্দ্র সাহা।গতকাল সোমবার রাউজান থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।তিনি বলেন,গত ২৭ অক্টোবর প্রবাসী মোহাম্মদ সরোয়ার চৌধুরী দুবাই হতে বাংলাদেশে এসেছেন।পরের দিন গত ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে প্রবাসী সরোয়ার এর মামার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সে ও তার পরিবারের লোকজন নিজ বাড়ি হতে আধা কিলোমিটার দূরে মামার বাড়িতে যান। সে সময় ঘরে তার বৃদ্ধ বাবা ছাড়া আর কোনো মানুষ ছিলোনা। এই সুযোগে গভীর রাতে একদল ডাকাত মোহাম্মদ সরোয়ার চৌধুরীর পাকা ঘরের পিছনে লোহার জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে তার বৃদ্ধ বাবা কে কম্বল দিয়ে চেপে ধরে চোখ মুখ ও হাত পা বেধে গলায় চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে আলমারির চাবি নিয়ে নেয়। ডাকাত দলের মধ্যে হতে মোঃ মুসা নামক একজন ব্যক্তি ভিকটিমের বাবার গলায় চাকু ধরে রাখে এবং চিৎকার করলে জবাই করে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। এসময় ডাকাত দলের অন্যান্য সদস্যরা আলমারীতে রক্ষিত অবস্থায় থাকা ভিকটিমের স্ত্রী, মা, বোনের স্বর্ণালংকার এবং অপরাপর আত্বীয় স্বজনের আমানত স্বরুপ রাখা স্বর্ণালংকারসহ সর্বমমোট ৭০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। এছাড়াও ডাকাত দল ভিকটিমের মামাতো বোনের বিবাহের জন্য ঘরে রাখা নগদ ০৫ লক্ষ টাকা, উন্নতমানের ০৫ মোবাইল এবং ০১টি স্যামসাং ব্রান্ডের ট্যাব লুট করে নিয়ে যায়।ভোর ৪টা পর্যন্ত তারা ওই বাড়িতে ডাকাতি করে। এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর সরোয়ার চৌধুরী রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। এছাড়া তিনি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাবের কাছেও লিখিত আবদেন করেন।তিনি আরও বলেন, তার আবেদনের পর এ ঘটনায় র্যাব অভিযান শুরু করে।গতকাল সোমবার বিকেলে রাউজান থানাধীন দক্ষিণ গহিরা সিবের ঘাট এলাকার একটি বাসা থেকে ডাকাতির মূলহোতা মুসাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাকাতি করা স্বর্ণালঙ্কার বিক্রির টাকাসহ মোট ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে- গহিরার উত্তর-পূর্ব কোতোয়ালী ঘোনা দলই এলাকার একটি বাড়ি থেকে সাইদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফের তাদের দুইজনের দেওয়া তথ্যমতে- আরও ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে গ্রিল কাটার, ছোরা, টর্চ লাইটসহ ৪৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, কয়েন এবং ডাকাতি হওয়া স্বর্ণ বিক্রির ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডাকাতির মালামাল গ্রহণকারী স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিপ্লব চন্দ্র সাহাকে তার দোকান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা ডাকাতরি ঘটনার কথা স্বীকার করে।গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।