মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার মাত্র একদিনের মাথায় কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীকে লোকসভায় অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে তার ভারতীয় লোকসভার সদস্য পদ খারিজ হয়ে গেল।
শুক্রবার দুপুরে রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে লোকসভা সচিবালয়।
এর আগে সকালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য লোকসভায় যান রাহুল গান্ধী। এ সময় লোকসভার অধিবেশনে ব্যাপক হট্টগোল হয়। বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে দুপুর পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এর পর রাহুল চলে যান। কেরালার ওয়েনাড লোকসভা আসনের সদস্য রাহুল।
রাহুলকে লোকসভায় অযোগ্য ঘোষণার পর জরুরি বৈঠক ডেকেছে তাঁর দল কংগ্রেস। এই বৈঠকে কংগ্রেসের স্টিয়ারিং কমিটি, সব রাজ্যের কংগ্রেসের সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে দলটি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মানহানির মামলায় বৃহস্পতিবার গুজরাটের সুরাটের একটি আদালতে ৫২ বছর বয়সী রাহুল দোষী সাব্যস্ত হন। তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আদালত রাহুলকে ৩০ দিনের জামিন এবং আপিল করার সুযোগ দিয়েছেন।
রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি হয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার চোর’। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়। সব চোরের পদবি কীভাবে ‘মোদি’ হয়।’
নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে এমন মন্তব্যের পর রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বিজেপির বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পুর্নেশ মোদি। সাজা পাওয়ার পর রাহুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১৩ সালে এক মামলার রায়ে বলেছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক বা বিধান পরিষদের সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্যপদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো সংসদ সদস্য কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, আর কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর পদ খারিজ হবে।