মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে এখনও অনুকূলে নয় বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
রোববার (১৯ মার্চ) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থিত ইউএনএইচসিআরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দপ্তর থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে এতথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আলোচনার বিষয়ে ইউএনএইচসিআর অবগত রয়েছে। তবে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ইউএনএইচসিআর আগের অবস্থানেই রয়েছে। কারণ, রাখাইনের পরিস্থিতি বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল নয়।
ইউএনএইচসিআর বলছে, প্রতিটি শরণার্থী তাদের পছন্দের ভিত্তিতে তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকার রাখে। তাদেরকে প্রত্যাবাসনে বাধ্য করা উচিত নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির বিষয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা তাদের মধ্যে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আস্থা তৈরি করবে। কারণ, পরিস্থিতি অনুকূলে এলে অনেক রোহিঙ্গা তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার আশা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সংস্থাটি বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আশা প্রকাশ করেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে শিগগিরই মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হবে।
এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বুধবার (১৫ মার্চ) বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করছে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল। প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত হয়েও যেসব রোহিঙ্গা বাদ পড়েছিলেন, এবারে তাদের তথ্য পুনরায় যাচাই-বাছাই করতে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশে আসে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আট লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছিল। এরপর মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি ফিরতি তালিকা পাঠানো হয়। ওই তালিকা থেকে পরিবারভিত্তিক প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৪০ জনকে বাছাই করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট থেকে পরবর্তী কয়েক মাস সহিংসতার মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সব মিলিয়ে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্প ও ভাসানচরে স্থানান্তরিত প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আছেন বলে জানা গিয়েছে।
গত ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে নানা প্রচেষ্টা চালানো হলেও বাংলাদেশ সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারেনি।