সাতকানিয়া প্রতিনিধি
মোহাম্মদ হোছাইন
সাতকানিয়া চৌকির সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশের বিরুদ্ধে একটি ওয়াজ মাহফিলে আদালত অবমাননাকর মন্তব্য করায় লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া আইনজীবি সমিতি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাতকানিয়া আদালত চত্বরে মানবন্ধন ও সমাবেশ থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানানো হয়।
আইনজীবীদের লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, লোহাগাড়ার চরম্বা ইউনিয়নে একটি বিরোধীয় ভূমিতে সাতকানিয়া চৌকির সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক ইব্রাহিম বিন খলিল স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। এ আদেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দীন বিবাদী পক্ষকে জায়গার দখল বুঝিয়ে দেন। বিষয়টি উক্ত মামলার বাদী চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারী ইউপি চেয়ারম্যানের স্থিতাবস্থার আদেশ অমান্যের বিষয়ে আদালতে অবগত করলে আদালত চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর বা শোকজ নোটিশ প্রদান করেন। চেয়ারম্যান নোটিশ পেয়ে ৩ মার্চ আদালতে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করলে আদালত চেয়ারম্যানকে আইন বিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে কারণ দর্শানোর দায় থেকে অব্যাহতি দেন। ৪মার্চ চরম্বা ইউনিয়ন এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যের এক পর্যায়ে আদালত সম্পর্কে বিষেদাগার করে বক্তব্য দেন চেয়ারম্যান। যা টাইম টিভি ২৪ নামক একটি পেইজের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক)ভাইরাল হলে বিষয়টি উক্ত মামলার বাদী ও জনগণের দৃষ্টিতে আসলে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় এবং বাদী এ বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন।
আইনজীবীদের লিখিত বক্তব্য থেকে আরও জানা যায়, ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
চেয়ারম্যান বলেন, বিগত কয়েকদিন আগে আমরা একটি বিচার করেছি মাইজভিলায়। তারা গিয়ে
আমার বিরুদ্ধে কোর্টে একটা পিটিশন দিয়েছে। আমাকে শোকজ করেছে কোর্ট। আমাকে যারা মহব্বত করে তারা ভয় করতেছে। আমি কিন্তু অন্যায় করি নাই।
বক্তব্যে চেয়ারম্যান আরও বলেন, তাঁর অর্ডারে তালা লাগানো ছিল না। অর্ডার নাই। সে যে তালা
লাগাইছে , আমার বিরুদ্ধে পিটিশন দিয়ে আপনি এগুলো দেখেন নাই। আপনি কিসের আইন।
জজ গিরি করেন। সে অন্যায় করেছে। আমি ঢাকার সাথে কথা বলেছি। আপনি জজ কোর্টে গিয়ে একটা পিটিশন দেন। তাঁর বারোটা বাজবে। আমি ঐ দিকে যায় নাই।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, আইন আমরা বুঝি। মোল্লার দৌঁড় মসজিদ পর্যন্ত। আমরা সব বুঝি।
এটা বুঝবেন না যে, আপনি জজ হয়েছেন বা আরেকটা হয়েছেন।
আইনজীবী সমিতির আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, সমিতির সহ-সভাপতি সুজন কুমার পালিত। বক্তব্য দেন, সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুর রকিব চৌধুরী,
সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিনহাজুর আবরার, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট
মেজবাহ উদ্দীন কচির ও সহ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এ এম ফয়সাল। এ সময় আইনজীবী
সমিতির সকল সদস্য ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা প্রচলিত আইন ও বিধি মোতাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা হেলাল উদ্দীনের দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির
দাবীর পাশাপাশি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।