এই রাত নিঃসন্দেহে ফজিলতপূর্ণ। এ নিয়ে যেমন বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়, তেমনিভাবে এই রাতের ফজিলতও অনস্বীকার্য। কেউ এটিকে অস্বীকার করলে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদিসকে অস্বীকার করা হবে। কেননা আলি ইবনে আবু তালিব রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন মধ্য শাবানের রাত আসে, তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ো এবং দিনে রোজা রাখো। কেননা এদিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিজিকপ্রার্থী? আমি তাকে রিজিক দেব। কে আছো রোগমুক্তি চাও? আমি তাকে সুস্থতা দেব। কে আছো এই এই চাও?’ এভাবে ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। (সুনানে ইবনে মাজাহ, ১৬২)
এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে আরও এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘শাবানের মধ্যরাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দেন। মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত সকল বান্দাদের ক্ষমা করেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৬৬৪৬)
সুতরাং এ রাতে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজের গোনাহসমূহের ক্ষমা চেয়ে, তাওবা করে গোনাহ মুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। এ রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত, কাজা নামাজসমূহ আদায়সহ অন্যান্য জিকির-আজকার করা যেতে পারে। আল্লাহর বিশেষ এ নিয়ামত যেন আমাদের থেকে এমনি এমনি হাতছাড়া না হয়ে যায়।
শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোনো ইবাদত বা নামাজ নেই। এদিনে ফজিলত মনে করে ভালো কোনো খাবারের আয়োজন করা বা হালুয়া-রুটি খাওয়া উচিত নয়, এগুলো বিদআত, ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। এই রাতকে কেন্দ্র করে কোনোরকম আনন্দ উদযাপন, আতশবাজী করা, মসজিদে-কবরস্থানে আলোকসজ্জা করা এসবই বিদআত, এসমস্ত কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা চাই। আল্লাহ আমাদের শবে বরাতের ফজিলত হাসিল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।