মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)’কে কটুক্তি করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার ভানোর ইউনিয়নে শাকিল হত্যা মামলার অন্যতম আসামী দেলোয়ার ও শামীমসহ ০৪ জনকে ঢাকার বংশাল, মোহাম্মদপুর ও সাভার এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরন ও হত্যাসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৯/০৮/২০২২ খ্রিঃ তারিখ ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াাডাঙ্গী থানায় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)’কে কটুক্তি করাকে কেন্দ্র করে গত ০৩/০৯/২০২২ খ্রিঃ তারিখ হলদবাড়ী হাট ভূমি অফিসের দক্ষিণ পার্শ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শাকিল আহমেদ (২৭) নামক এক ব্যক্তিসহ ০৩ জন গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আহতদের চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাকিলসহ ০৩ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করেন। উক্ত ঘটনায় মোঃ সাইদ আলম (৩৯) বাদী হয়ে দেলোয়ার ও শামীমসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে বালিয়াডাঙ্গী থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৪, তারিখ ০৪/০৯/২০২২ খ্রিঃ, ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭১/৩৫৪/ ১১৪/৫০৬ দন্ড বিধি। মামলার বিষয়টি জানতে পেয়ে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত দেলোয়ার ও শামীমসহ তাদের সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যায়।
পরবর্তীতে গত ০৪/০৯/২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক সকাল ০৭:৩০ ঘটিকায় শাকিল উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ভিকটিম শাকিল আহমেদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে পেনাল কোড ৩০২ ধারায় নথিভূক্ত করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন দাখিল করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ)’কে কটুক্তি করাকে কেন্দ্র করে শাকিল হত্যার সংবাদটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হবার পর ঘটনাটি ঠাকুগাঁওসহ দেশব্যপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
উক্ত হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে র্যাব ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১০/০৯/২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাজধানী ঢাকার বংশাল থানাধীন আরমানিটোলা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যা মামলার ০২ নং এজাহারনামীয় অন্যতম পলাতক আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৪৫)’কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত দেলোয়ারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হেমায়েতপুরের ঋষি পাড়া এলাকায় হতে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ হাবিব হোসেন (২৪)’কে গ্রেফতার করে। দেলোয়ার ও হাবিব এর দেয়া তথ্যমতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন নবীনগর হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার ০৩ নং এজাহারনামীয় পলাতক আসামী মোঃ শামীম হোসেন @ সামিউম বাছির (২০) ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ জসিম উদ্দিন (৩৪)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত ঘটনার সাথে তাদের স¤পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর এর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।