জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে জন্ম থেকে শারীরিক আকার প্রতিবন্ধী সজীব মিয়া সকল বাঁধা বিপত্তিকে থেকে জয় করে করেছে মাস্টার্স পাস, দিয়েছে বিসিএস পরীক্ষা,সজীবের ইচ্ছা প্রশাসন ক্যাটার থেকে বিসিএস পাশ করে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ।সজীব মিয়া উচ্চতায় তিন ফিট জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী, সজীব মিয়ার বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলমতি কলাবাগান গ্রামে। অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকলে সবকিছু জয় করা সম্ভব তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শারীরিক প্রতিবন্ধী সজীব মিয়া।অভাবি সংসারে বাবা মায়ের ছোট সন্তান হলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ২০১৯ সালে অনার্স ও ২০২০ সালে মাস্টার্স পাশ করেছে সজীব মিয়া,দিয়েছেন ৪৫ তম বিসিএস পরীক্ষা, হতে চান ম্যাজিস্ট্রেট,অভাবী সংসার থাকার কারণে বসে না থেকে দুটি ব্যাচ টিউশনি করিয়ে যা আসে তা দিয়েই সংসার চালান সজীব মিয়া।
আকারে ছোট হলেও প্রখর মেধা শক্তি দিয়ে বাম হাতে লিখে সহজেই ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে দেন যে কোন বিষয়। আর ছাত্র ছাত্রীরা সজীব মিয়ার কাছে টিউশনি করে সহজে বুঝতে পারেন।অদম্য ইচ্ছা শক্তি সজীব মিয়ার মেধাবী কার্যক্রম দেখে রীতিমতো অবাক অনেকেই।
পরিবার ও এলাকাবাসী জানান শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও ছোট বেলা থেকেই সজীব মিয়ার লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছা তাকে এত দুর নিয়ে এসেছে। কোন বাধাই সজীব মিয়ার লেখাপড়া বন্ধ করতে পারিনি। শত অভাব অনটনের মাঝেও লেখাপড়া করে সুযোগ নিয়ে আজ মাস্টার্স পাশ করে বিসিএস দিয়েছে।
সজীব মিয়ার কাছে টিউশনি করা আরিফ সফিকুল,মনি জানান, অন্যান্য স্যারের চেয়ে সজিব স্যার অনেক ভালো বুঝান, যেকোনো বিষয়ে সজিব স্যার আমাদের সহজে বুঝিয়ে দেন আমরা তা বুঝতে পারি, তাই আমরা সজীব স্যারের কাছে টিউশনি করে আনন্দ পাই এবং আমাদের লেখাপড়া অনেক ভালো হচ্ছে।
নাওডাঙ্গা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ জানান, সজীব আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিল, সে প্রখর মেধাবী ছিল,ছোটকাল থেকে তার লেখাপড়ার প্রতি প্রচুর আগ্রহ ছিল সে এখন মাস্টার্স পাশ করেছে বিসিএস দিচ্ছে শুনেছি সে একজন ম্যাজিস্ট্রেট হতে চায়, দোয়া করি তার মনের আশা যেন আল্লাহ পূরণ করে।
সজীব মিয়া জানান,মানুষের সকল বাধা বিপত্তি কে পিছনে ফেলে আমি আমার ইচ্ছা শক্তি দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি, আমার ইচ্ছে আমি বিসিএসএ পাস করে ম্যাজিস্ট্রেট হতে চাই, আর আমাকে দেখে যেন প্রতিবন্ধীরা সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে পারে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, ইচ্ছা থাক শক্তি থাকলে যে সব কিছু জয় করা যায় তারই প্রমাণ দিয়েছে সজীব, সে আকার প্রতিবন্ধী হয়েও শত প্রতিকূলতাকে জয় করে মাস্টার্স পাশ করে এখন বিসিএস দিচ্ছে, তার ইচ্ছে বিসিএস পাশ করে একজন ম্যাজিস্ট্রেট হবে, আমি তার সাফল্য কামনা করি যাতে তার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।