সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ধাপের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মন্ডল (৩০)।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর অঞ্চলের প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের মূল হোতা অসীম গাইন। তিনি ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করেন। যাদের বয়স শেষের দিকে তাদেরকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হতো। চুক্তির শুরুতে ২ লাখ টাকা, লিখিত পরীক্ষায় পাস করলে ৪ লাখ এবং চূড়ান্ত নির্বাচিত হলে ৬-৮ লাখ টাকা দেয়ার চুক্তি হতো।
ডিবিপ্রধান বলেন, জ্যোতির্ময় গাইনের বড় ভাই এবং পলাতক আসামি অসীম গাইনের ভাইয়ের ছেলে তন্ময় গাইন সহকারী জজ হওয়ায় তারা আইনি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে সহকারী জজ তন্ময় গাইন সরাসরি সম্পৃক্ত কি না, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
হারুন বলেন, অসীম গাইনসহ চক্রটি এর আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে এবং অল্পদিনেই কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। নিজ এলাকায় অসীম গাইনের বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। এছাড়া তিনি আদম ব্যবসা, হুন্ডি ব্যবসা, ডিশ/ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানানো হবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন বলেন, আমরা এই মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন না-কি বহাল রাখবেন। তারা তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।