মো : আহসানুল ইসলাম আমিন, স্টাফ রিপোর্টার : মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া স্পিডবোট ঘাটে কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্য তার কর্মস্থল গোপন করে দৈনিক কালের কন্ঠ’র মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি ও বিক্রমপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মাসুদ খানের সাথে র্দুব্যবহার ও অসৈজন্যমূলক আচরণ করেন। এতে মুন্সিগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের মাঝে বিষ্ময় ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে শিমুলিয়া স্পিডবোট ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক সমকালের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি কাজী সাব্বির আহমেদ দিপু বলেন, কর্মস্থল গোপন করে পুলিশের পোকাশ পরে সাংবাদিকের সাথে অসৈজন্য মূলক আচরণ মানে তার মধ্যে ন্যায় পরায়নতার অভাব রয়েছে। সৎ পুলিশ সদস্য হলে তিনি তার কর্মস্থল গোপন করতেননা। এসব সদস্যের জন্য পুলিশের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপারের উচিৎ এখনই এই পুলিশ সদস্যের উপর ব্যবস্থা নেয়া। নয়তো ভবিষ্যতে এরাই পুলিশের ভাবমুর্তি নষ্ট করবে।
বিক্রমপুর প্রেসক্লাবের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও এসএ টিভির জেলা প্রতিনিধি এম তরিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান পুলিশ নিজের অতীতকে পেছনে ফেলে মানবিক পুলিশে পরিণত হয়েছে। এরকম দু একজন পুলিশের জন্য যাতে এ মানবিক পুলিশকে পেছনে চলে যেতে না হয়, জেলা পুলিশ সুপার সে ব্যবস্থা করবেন বলে আমাদেও দাবী।
প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এটিএন নিউজের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি ভবতোষ চৌধুরী নুপুর বলেন, শুধু কর্মস্থল গোপন করেই অপরাধ করেনি বরং তিনি অন্য কর্মস্থলের নাম বলে সত্য গোপন করেছেন। এধরণের পুলিশ সদস্য কখনই মানবিক পুলিশ হতে পারেনা। তার মধ্যে সততার অভাব রয়েছে। এরকম পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে কালের কন্ঠ’র মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি মো. মাসুদ খান পেশাগত দায়িত্ব পালনে শিমুলিয়া স্পিডবোট ঘাটে যান। এসময় দেখা যায় বেশীর ভাগ স্পিডবোটে যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট নেই। স্পিডবোটগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী নিতেও দেখতে পান তিনি। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের সামনে অতিরিক্ত যাত্রী ও লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবোটগুলো ছেড়ে গেলেও তারা সেদিকে তেমন গুরুত্বই দিয়নি। এসময় দায়িত্বরত পুলিশের এএসআই সাইদ-এর কাছে ১২ জনের বোটে ১৭ জন যাত্রী তুলে বোট ছেড়ে যাচ্ছে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিআইডব্লিউটিএর সাথে যোগাযোগ করেন। তাহলে পুলিশ এখানে কেন? তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছি। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দায় দায়িত্ব কে নেবে? এটি কি আইন শৃঙ্খলার মধ্যে পরেনা? এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। এসময় সে কোন থানায় আছে এবং তার পদমর্জাদা জানতে চাইলে, তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, লৌহজং থানায় আছি। পোশাকের দিকে দেখিয়ে তিনি বলেন যদি পুলিশই চিনতে না পারেন তবে ঘাট থেকে চলে যান। আপনার মত সাংবাদিক দরকার নেই। তিনি এ সময় মাসুদ খানের সাথে র্দুব্যবহার ও অসৈজ্যমূলক আচরণ করেন।
পরে বিষয়টি মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করলে তিনি তাৎনিক রেডিওতে এই নামে লৌহজং থানায় কোন এএসআই আছে কিনা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা জানান, সেখানে এ নামে কেউ নেই। পরে তিনি তার অধিনস্ত এক কর্মকর্তাকে ওই এএসআই-এর পরিচয় বের করে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই এএসআই-এর নাম সাইদুর রহমান সাইদ। তিনি মুন্সিগঞ্জ কোর্টে কর্মরত আছেন। নিজের কর্মস্থল গোপন করে তিনি লৌহজং থানার পরিচয় দেন। এতে সাংবাদিক সমাজ বিষ্ময় ও ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। #