র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, ছিনতাইকারীসহ মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছে। এছাড়া নারী ও শিশু অপরহণ উদ্ধারে র্যাবের অভিযানে অব্যাহত রয়েছে। র্যাবের এই অভিযান দেশের সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ঝাউলাহাটি এলাকায় ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাসরত সোনিয়া আক্তার (২১) নামক একজন মহিলা স্বামী- মোঃ সাগর (২৩) পেশায় প্লাস্টি কারখানার শ্রমিক। গত ১৩ জুলাই ২০২২ খ্রীঃ তারিখ উক্ত মহিলার ভাসুর মোঃ শাহজাহান (২৮) পেশায় একজন রিকশা চালক সে তার কাজ শেষে বাড়ী ফেরার পথে মুন্নি ও মোঃ সুমন নামক দুইজন ব্যক্তির সাথে দেখা হলে তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আশ্রয়ের জন্য শাহজাহান এর নিকট সাহায্য চাইলে শাহজাহান তাদেরকে আশ্রয়ের জন্য তার ছোট ভাই সাগর এর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার ভাই সাগর ও সাগরের স্ত্রী সোনিয়ার কাছে মুন্নি ও সুমন’কে আজকের রাতের জন্য তাদের বাসায় থাকার জায়গা দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। শাহজাহানের অনুরোধে সাগর ও তার স্ত্রী সোনিয়া মুন্নি ও সুমন’কে তাদের বাসায় থাকার জন্য জায়গা দেয়।
পরের দিন ১৪/০৭/২০২২ খ্রীঃ তারিখ সকালে যথারিতি সাগর ও শাহজাহান তাদের কাজের জন্য বাহিরে গেলে সুমনও তাদের সাথে বেরিয়ে যায়। অতপর আনুমানিক দুপুর ১৪:৩০ ঘটিকার সময় সাগরের স্ত্রী সোনিয়া তার ০৭ মাসের শিশু কন্যা মোছাঃ মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে মুন্নির পাশে তাদের খাটের উপর শুয়ে রেখে দুপুরের রান্না করার জন্য রান্না ঘরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষন পর সোনিয়া তার মেয়ের কোন সারাশব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতরে গিয়ে তার মেয়ে ও মুন্নিকে দেখতে না পেয়ে ডাক চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে জড়ো করে। অনেক খোজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার স্বামী ও ভাসুরকে ঘটনাটি জানায়। পরর্বর্তীতে সোনিয়া তার স্বামী ও ভাসুরসহ আতœীয়স্বজনদের সাথে পরামর্শ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে র্যাব-১০ এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গত ১৪ জুলাই ২০২২ খ্রীঃ তারিখ আনুমানিক রাত ২০:৩০ ঘটিকায় গোপন সংবাদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন হুজুরপাড়া বেইলী রোড এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার ৬ ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমের মা সোনিয়া আক্তারের দেখানো ও শনাক্ত মতে চুরিকৃত ০৭ মাস বয়সী শিশু কন্যা মোছাঃ মোছাইফা ইসলাম জান্নাতকে উদ্ধার করত মুন্নি (১৮) ও মোঃ সুমন (২০)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা শিশু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ কামরাঙ্গীরচরসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসা বাড়ী থেকে শিশু বাচ্চা চুরি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নিঃসন্তানদের নিকট মোটা অংকের অর্থের নিবিময়ে বিক্রি করে আসছিল বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।