ফেসবুকের শেয়ারের দাম কমায় শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মার্ক জাকারবার্গ ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার খোয়ালেন। আর এতে তিনি শীর্ষ দশ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে গেলেন।
ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটার শেয়ারের দাম এদিন সকালে দেড় শতাংশ কমে যায়। এমনটাই জানিয়েছে বৃটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল।
এর আগে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ার খবরে বৃহস্পতিবার মেটার শেয়ার পড়ে যায় ২৬ শতাংশ। এতে মেটার বাজারমূল্য আরও পড়ে যায়।
ফোর্বসের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে জাকারবার্গের অবস্থান ছিল ৮ নম্বরে। শুক্রবার সকালে তার অবস্থান নেমে আসে ১৩ নম্বরে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পরে এই প্রথম মার্ক জাকারবার্গের মালিকাধীন সংস্থার ব্যবহারকারীর সংখ্যা এই পরিমাণে কমল। ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মেটার লভ্যাংশ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে। ধাক্কা খেয়েছে এই সংস্থার বিজ্ঞাপন ব্যবসাও।
যদিও সংস্থার দাবি বুধবার তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা আবার বেশ খানিকটা বেড়েছে। তবে এই সংখ্যা শুধু ফেসবুকের না। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস্অ্যাপসহ সব মাধ্যমগুলো মিলিয়েই এই বৃদ্ধি।
এই সংকটের সময়ে বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় মেটা। বৃহস্পতিবার এই সংস্থার শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ। ফলে এক দিনে এই সংস্থার বাজারমূল্য প্রায় ২৩০ বিলিয়ন ডলার কমে যায়।
কেন হঠাৎ এই অবস্থা হল? বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধির দিন ফুরিয়েছে। ফেসবুক শেষ দুই ত্রৈমাসিকে প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী হারিয়েছে।
অনেকে আবার মনে করছে, সংস্থা নতুন ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা হারিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবহারকারীদের সংখ্যা কমে যাওয়া এই ইঙ্গিতই দেয় যে এই অ্যাপের ব্যাবহারকারীদের সংখ্যা সম্ভবত শীর্ষে পৌঁছেছে।
হোয়াটস্অ্যাপ অ্যাপটি এত বছর ধরে বাজারে রাজত্ব করা সত্ত্বেও এই অ্যাপের মাধ্যমে রোজগারের ক্ষেত্র খুব সীমিত। তাই কোনো একটি অ্যাপ সমস্যার মুখোমুখি হলে হোয়াটস্অ্যাপ সেই অ্যাপ-কে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছে না। এটাকেও মেটার হঠাৎ পতনের একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অ্যাপল তাদের অপারেটিং সিস্টেমে নয়া সংযোজন হিসেবে এমন একটি কৌশল রেখেছে যাতে ফেসবুকের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে না পারে। এর ফলে অ্যাপল মোবাইল ব্যবহারকারীদের নেটমাধ্যমে কার্যক্রম নীরিক্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে ফেসবুক। যার কারণে তাদের কাছে সঠিক বিজ্ঞাপনও পৌঁছতে পারছে না এই সংস্থা।
অনেক ব্যবসায়িক সংস্থা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো ফেসবুকে দেওয়ার বদলে গুগলে দিচ্ছে। এত দিন ফেসবুক এই বিজ্ঞাপন ব্যবসায় একাধিপত্ব চালাচ্ছিল। কিন্তু এই নয়া প্রতিদ্বন্দ্বী আসায় তারা ক্ষতির মুখ দেখছে।