ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেছেন রিজার্ভ নাকি আওয়ামী লীগ চিবিয়ে খায় নাই, গিলে খেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা কখনো কিছু গিলে খাননি। গিলে খেয়েছেন আপনারা’।
তিনি বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল, আমাদের অতীত মনে করতে বাধ্য করেন আপনারা। তখন দেড় শ ট্রাঙ্ক ভরে টাকা নিয়ে সৌদি আরব চলে গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া, দুর্নীতির দায়ে দেশ তখন পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেননি। জাতিকে শুধু খাম্বা দিয়ে ধোঁকা দিয়েছিলেন। হাওয়া ভবন নিয়ে সব অর্থ লুটপাট এবং গিলে খেয়েছিলেন’।
শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শাহবাগ-রমনা থানা এবং অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
মেয়র তাপস বলেন, ‘বিএনপির কার্যকলাপ দেখে আমার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর একটি কথা মনে পড়ে যায়। যিনি বলেছিলেন, গণিতের ভাষায় যেমন শূন্য যোগ, শূন্য যোগ, শূন্য হয়। তেমনি রাজনীতির গণিতেও শূন্য যোগ, শূন্য যোগ, শূন্যই হয়। বিএনপির ভবিষ্যৎ শূন্য, ফখরুল ইসলাম আলমগীর শূন্য, বিশ দলীয় জোটের ভবিষ্যতও শূন্য’।
ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, রেজা কিবরিয়াকে শূন্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তাপস বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে খুব বাহাদুরি করে, নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে এসেছেন। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ভুলে গিয়েছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত মাল এবং আরো কয়টি দল নিয়ে ২০ দল বানিয়েছিলেন’।
তাপস বলেন, ‘২০০৬ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিলে ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত সঞ্চয় করতে হয়। কিন্তু আপনারা করেননি। শেখ হাসিনার সরকার সঞ্চয় করেছেন’।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার ৪৮ বিলিয়ন রিজার্ভ সৃষ্টি করেছিলেন বলে এ মহাসংকটেও মাথা উঁচু করে টিকে আছেন। বিএনপি বলে রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল বানিয়েছি’।
মেয়র তাপস আরো বলেন, ‘বিএনপি বলে আওয়ামী লীগ সরকার নাকি আন্দোলনের ভয়ে তাদের সমাবেশের আগে বাস বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ বাসের মালিকরা বাস বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে পেট্রোলবামা মেরে বাস পুড়িয়েছে এই বিএনপি। নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করেছে। এ জন্য বাসের মালিকরা আপনাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। আপনারা সব দোষ আওয়ামী লীগকে দিতে চান। আমরা যদি বিএনপির সভা-সমাবেশ বন্ধ করতে চাই, তাহলে বরিশালের জনসভা আমার মামাতো ভাইরে (সাদিক আবদুল্লাহ) কইলেই সাবাড় করে দিবে। আর কারো লাগব? একটা মানুষও তো বরিশালে পা দিতে পারবেন না। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে। তাই আপনারা জনসভা করতে পারেন। বিএনপির জনসভায় লোক হয় না, এটাও আওয়ামী লীগের দোষ’।
তিনি বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। এ সময়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কেউ বাসায় ঘুমাতে পারে নাই। কোনো জনসভা তো দূরের কথা একটা ছোট সভাও তো করতে দেন নাই। আমাদের অনেক ত্যাগী নেতাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন’।
মেয়র তাপস বলেন, ‘২০০৮ সাল পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো। এখন শ্রীলঙ্কায়ও ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়। আপনাদের আমলে শ্রীলঙ্কার অবস্থা ছিল এদেশে। ভারতে ১১ ঘণ্টা, অস্ট্রেলিয়াতে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়। যখন সারাবিশ্বে তীব্র সংকট, তখন জননেত্রীর ২ ঘণ্টা লোডশেডিং অবশ্যই আমরা সহ্য করব’।
তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচনে আসতে হবে। আগামীতেও নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে এদেশের জনগণ।