কুমিল্লায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম (২৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি নিহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গোলাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রবিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।নিহত মো. রাজু (৩৫) জেলার আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে।তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালানের মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের গোলাবাড়ি এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারিরা অবস্থান নিয়েছে, এমন খবর পেয়ে র্যাবের টহল দল শেখানে অভিযানে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোঁড়ে। জবাবে আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি শেষে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে জানতে পারি ওই ব্যক্তি সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি রাজু। এ ঘটনায় র্যাবের একজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মেজর সাকিব আরো বলেন, আমরা ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সন্ত্রাসী রাজুর মরদেহ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে রবিবার সকালে ময়নাতদন্ত হবে। আমরা পালিয়ে যাওয়া অপর সন্ত্রাসীদের আটকের চেষ্টা করছি।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় মাদক কারবারিদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদনগর এলাকায় ওই সাংবাদিককে হত্যা করা হয়। নিহত মহিউদ্দিন পাশের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের অলুয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মোশারফ হোসেন সরকারের ছেলে। তিনি আগে আনন্দ টেলিভিশনের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। এছাড়া দৈনিক কুমিল্লার ডাক নামে স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে স্টাফ রিপোর্টার পদে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নিহত মহিউদ্দিন সরকার নাঈমের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচংয়ের ভারত সীমান্তের শীর্ষ মাদক ও চোরাকারবারি মো. রাজুকে। এ মামলার এজাহারভুক্ত অপর দুই আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে।