ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এনবিআরে ব্যাপক রদবদল কালুখালীতে ভ্যান ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল মাছ ব্যবসায়ীর ফরিদগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ভোলা সদর উপজেলার পঃ ইলিশায় যুবশক্তি ছাত্র কল্যাণ সংঘের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন: মানবসেবায় নতুন দিগন্তের সূচনা ৩৩ ধরনের ওষুধের দাম কমলো এসেনসিয়াল ড্রাগস একদিনে দুই লাশ উদ্ধার: গৃহবধূ ও অজ্ঞাত যুবক যুক্তরাজ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন-জুয়াকের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন করতে কানাডা যাচ্ছেন সিইসি ইউকেএম থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেলেন প্রধান উপদেষ্টা দেশ-বিদেশে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিই বিএনপির রাজনীতি: তারেক রহমান

সাঈদুর রহমান রিমনকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব, গাজীপুর প্রেসক্লাবে কান্নাভেজা স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল

সাংবাদিক

বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কিংবদন্তি, দৈনিক বাংলাভূমি’র প্রধান সম্পাদক সাঈদুর রহমান রিমনের আকস্মিক প্রয়াণে এক শোকাবহ পরিবেশে গাজীপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই আপোষহীন, নির্ভীক সাংবাদিক—যার মৃত্যুর পর যেন স্তব্ধ হয়ে যায় কলম, কাগজ আর প্রতিবাদের ভাষা।

সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিংবদন্তির অনুসন্ধানী সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমন এর রিমন সহধর্মিণী চামেলি রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন দৈনিক বাংলাভূমি’র সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম আজহার, সঞ্চালনা করেন কবি, লেখক ও বাংলাভূমি’র বিশেষ প্রতিনিধি শাহান সাহাবুদ্দিন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ ফাহিম আহম্মেদ।

বক্তব্য রাখেন যারা

এই আয়োজনে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু (জনকণ্ঠ), সাবেক সভাপতি নাসির আহমেদ (এন টিভি), সাবেক সভাপতি খায়রুল ইসলাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), সাধারণ সম্পাদক শাহ সামসুল হক রিপন (যুগান্তর), সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন (দৈনিক দিনকাল), মো. রেজাউল করিম বাবুল (দৈনিক সংগ্রাম), সাংবাদিক এম.এ ফিরোজ (সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি), কাজল খান (সভাপতি, গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি), সিনিয়র রিপোর্টার নুর আলম সিদ্দিকী মানু( বাংলাভূমি) কামরুজ্জামান (এটিএন নিউজ, ঢাকা জেলা উত্তর), গাজীপুর সাংবাদিক পরিষদের সভাপতি মো. মোজাহিদ (দৈনিক নয়া দিগন্ত মাল্টিমিডিয়া), সাংবাদিক শেখ রাসেল (জনকণ্ঠ মাল্টিমিডিয়া), রোকুনুজ্জামান খান, মিঠুন সিদ্দিকী (শিক্ষক ও সাংবাদিক), নজরুল ইসলাম (সাংবাদিক), এস এম জহিরুল ইসলাম (দৈনিক আমার সংবাদ), শিক্ষক মো. আব্দুস সাত্তার শান্ত, এবং আরও অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও সুধীজন।


সিনিয়র সাংবাদিকদের হৃদয়বিদারক স্মরণ

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু বলেন:
“সাঈদুর রহমান রিমন ছিলেন দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এক অনন্য উদাহরণ। তিনি ছিলেন সাংবাদিকতার সাহসী কণ্ঠ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্রনিনাদ।”

নাসির আহমেদ বলেন:
“সত্য প্রকাশে কোনো রকম ভয় বা দ্বিধা ছিল না তাঁর মধ্যে। অনুসন্ধানে গিয়ে তিনি কখনো কারো মুখাপেক্ষী হননি।”

খায়রুল ইসলাম বলেন:
“যে সময় সাংবাদিকতা চাপের মুখে, সেই সময় রিমন ভাই ছিলেন দুরন্ত বাতাসের মতো—সংবাদমাধ্যমে নৈতিকতার দিশারী।”

শাহ সামসুল হক রিপন বলেন:
“তাঁর কলমে ছিল আগুন, মুখে ছিল সত্য। রিমন ভাই হারিয়ে শুধু বাংলাভূমি নয়—বাংলাদেশের সাংবাদিকতা একটি মেরুদণ্ড হারাল।”

নজরুল ইসলাম আজহার বলেন:
“রিমন ভাই বলেছিলেন, বাংলাভূমিকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে পত্রিকাটি আজ সত্য, সাহস আর সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে।”

হৃদয়ভাঙা শব্দে ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা

নুর আলম সিদ্দিকী মানু বলেন:
“গত এক যুগের বেশি সময় ধরে রিমন ভাই ছিলেন আমার ছায়া, আমার দিশারী। তিনি শুধু একজন সম্পাদক ছিলেন না—একজন আদর্শ নির্মাতা ছিলেন।”

শাহান সাহাবুদ্দিন বলেন:
“রিমন ভাই ছিলেন আমার জীবনের এক প্রজ্ঞাবান আশ্রয়। সাংবাদিকতা তাঁর কাছে ছিল নৈতিক যুদ্ধ। বনবিভাগের ওপর একটি অনুসন্ধানী সংখ্যা সম্পাদনা করে মৃত্যুর আগের রাতেই তা সম্পূর্ণ করেন তিনি। সেই রাতে আমরা একসঙ্গে ছিলাম—রিমন ভাই, আমি, তুহিন ভূঁইয়া ও জামাল সরকার। এরপর সকালে হিলফুল এডুকেশন একাডেমি পরিদর্শনে যান। তারপর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মহান আল্লাহর কাছে ‘ইয়া হাফিজু’ উচ্চারণ করতে করতেই তিনি সমর্পিত হলেন।”

মো. মোজাহিদ বলেন:
“রিমন ভাই ছিলেন আমার নৈতিক ভরসার স্থান। তিনি আমার অভিভাবক, কলমযুদ্ধে সাহসের চূড়া। তাঁর শূন্যতা পূরণ হবার নয়।”

মিঠুন সিদ্দিকী বলেন:
“ শাহান সাহাবুদ্দিন ভাইয়ের আর্তনাদে সাড়া দিয়ে নরওয়ে বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল থেকে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার প্রাইভেটকার দিয়ে নেওয়ার পথে ভাওরাইদ স্কুলের সামনে গাড়ি নষ্ট হয়। মনে হচ্ছিল—এত বড় মানুষ অথচ কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা বিকল্প নেই—এটাই রাষ্ট্রের করুণ চিত্র। পরে পিক-আপ যুগে তাঁকে নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক এছাড়া উপায় ছিল না।”

আব্দুস সাত্তার শান্ত বলেন:
“সকাল সাড়ে দশটায় আমার স্কুলে এসে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন। এমন কিছু উপদেশ দিলেন, যা আমার শিক্ষকতা জীবনের দিকবদল ঘটাবে।”

দোয়া মাহফিল

সভা শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের খতিব মাওলানা মো. মনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, “একজন মানুষ যে কতজনের ভালোবাসা ও দোয়ার কারণ হতে পারেন—সাঈদুর রহমান রিমন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসে মর্যাদা দান করেন।”

একটি শূন্যতা, একটি যুগের অবসান

বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হারাল একজন অগ্নিকণ্ঠ। সাহস, সততা ও শুদ্ধতার প্রতীক ছিলেন সাঈদুর রহমান রিমন। তাঁর জীবনের প্রতিটি অনুসন্ধান ছিল সমাজের অন্ধকারে একটি প্রদীপ জ্বালানো। তিনি ছিলেন লুটেরাদের আতঙ্ক, শোষকের মুখোশ উন্মোচনের যন্ত্র। তাঁর স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠান কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়—এ যেন কলমের কান্নায় গাঁথা প্রতিরোধের আলেখ্য।

সাঈদুর রহমান রিমন ছিলেন, আছেন, এবং থাকবেন সাংবাদিকতার হৃদপিণ্ডে—এক অনল জাগানিয়া নাম।
তাঁর চলে যাওয়া কেবল একজন মানুষের মৃত্যু নয়, একটি যুগের অন্ত্য।
বাংলাভূমি পরিবারের আয়োজনে গড়া এই আয়োজন ছিল শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কান্না আর সংগ্রামের এক ব্যতিক্রমী সংলাপ।

ট্যাগ :

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপডেটের সময় : ০৯:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
৫৩৪ Time View

সাঈদুর রহমান রিমনকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব, গাজীপুর প্রেসক্লাবে কান্নাভেজা স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল

আপডেটের সময় : ০৯:১৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কিংবদন্তি, দৈনিক বাংলাভূমি’র প্রধান সম্পাদক সাঈদুর রহমান রিমনের আকস্মিক প্রয়াণে এক শোকাবহ পরিবেশে গাজীপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই আপোষহীন, নির্ভীক সাংবাদিক—যার মৃত্যুর পর যেন স্তব্ধ হয়ে যায় কলম, কাগজ আর প্রতিবাদের ভাষা।

সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিংবদন্তির অনুসন্ধানী সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমন এর রিমন সহধর্মিণী চামেলি রহমান। সভায় সভাপতিত্ব করেন দৈনিক বাংলাভূমি’র সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম আজহার, সঞ্চালনা করেন কবি, লেখক ও বাংলাভূমি’র বিশেষ প্রতিনিধি শাহান সাহাবুদ্দিন। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ ফাহিম আহম্মেদ।

বক্তব্য রাখেন যারা

এই আয়োজনে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু (জনকণ্ঠ), সাবেক সভাপতি নাসির আহমেদ (এন টিভি), সাবেক সভাপতি খায়রুল ইসলাম (বাংলাদেশ প্রতিদিন), সাধারণ সম্পাদক শাহ সামসুল হক রিপন (যুগান্তর), সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন (দৈনিক দিনকাল), মো. রেজাউল করিম বাবুল (দৈনিক সংগ্রাম), সাংবাদিক এম.এ ফিরোজ (সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি), কাজল খান (সভাপতি, গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি), সিনিয়র রিপোর্টার নুর আলম সিদ্দিকী মানু( বাংলাভূমি) কামরুজ্জামান (এটিএন নিউজ, ঢাকা জেলা উত্তর), গাজীপুর সাংবাদিক পরিষদের সভাপতি মো. মোজাহিদ (দৈনিক নয়া দিগন্ত মাল্টিমিডিয়া), সাংবাদিক শেখ রাসেল (জনকণ্ঠ মাল্টিমিডিয়া), রোকুনুজ্জামান খান, মিঠুন সিদ্দিকী (শিক্ষক ও সাংবাদিক), নজরুল ইসলাম (সাংবাদিক), এস এম জহিরুল ইসলাম (দৈনিক আমার সংবাদ), শিক্ষক মো. আব্দুস সাত্তার শান্ত, এবং আরও অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও সুধীজন।


সিনিয়র সাংবাদিকদের হৃদয়বিদারক স্মরণ

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু বলেন:
“সাঈদুর রহমান রিমন ছিলেন দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এক অনন্য উদাহরণ। তিনি ছিলেন সাংবাদিকতার সাহসী কণ্ঠ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজ্রনিনাদ।”

নাসির আহমেদ বলেন:
“সত্য প্রকাশে কোনো রকম ভয় বা দ্বিধা ছিল না তাঁর মধ্যে। অনুসন্ধানে গিয়ে তিনি কখনো কারো মুখাপেক্ষী হননি।”

খায়রুল ইসলাম বলেন:
“যে সময় সাংবাদিকতা চাপের মুখে, সেই সময় রিমন ভাই ছিলেন দুরন্ত বাতাসের মতো—সংবাদমাধ্যমে নৈতিকতার দিশারী।”

শাহ সামসুল হক রিপন বলেন:
“তাঁর কলমে ছিল আগুন, মুখে ছিল সত্য। রিমন ভাই হারিয়ে শুধু বাংলাভূমি নয়—বাংলাদেশের সাংবাদিকতা একটি মেরুদণ্ড হারাল।”

নজরুল ইসলাম আজহার বলেন:
“রিমন ভাই বলেছিলেন, বাংলাভূমিকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে পত্রিকাটি আজ সত্য, সাহস আর সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে।”

হৃদয়ভাঙা শব্দে ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা

নুর আলম সিদ্দিকী মানু বলেন:
“গত এক যুগের বেশি সময় ধরে রিমন ভাই ছিলেন আমার ছায়া, আমার দিশারী। তিনি শুধু একজন সম্পাদক ছিলেন না—একজন আদর্শ নির্মাতা ছিলেন।”

শাহান সাহাবুদ্দিন বলেন:
“রিমন ভাই ছিলেন আমার জীবনের এক প্রজ্ঞাবান আশ্রয়। সাংবাদিকতা তাঁর কাছে ছিল নৈতিক যুদ্ধ। বনবিভাগের ওপর একটি অনুসন্ধানী সংখ্যা সম্পাদনা করে মৃত্যুর আগের রাতেই তা সম্পূর্ণ করেন তিনি। সেই রাতে আমরা একসঙ্গে ছিলাম—রিমন ভাই, আমি, তুহিন ভূঁইয়া ও জামাল সরকার। এরপর সকালে হিলফুল এডুকেশন একাডেমি পরিদর্শনে যান। তারপর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মহান আল্লাহর কাছে ‘ইয়া হাফিজু’ উচ্চারণ করতে করতেই তিনি সমর্পিত হলেন।”

মো. মোজাহিদ বলেন:
“রিমন ভাই ছিলেন আমার নৈতিক ভরসার স্থান। তিনি আমার অভিভাবক, কলমযুদ্ধে সাহসের চূড়া। তাঁর শূন্যতা পূরণ হবার নয়।”

মিঠুন সিদ্দিকী বলেন:
“ শাহান সাহাবুদ্দিন ভাইয়ের আর্তনাদে সাড়া দিয়ে নরওয়ে বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল থেকে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার প্রাইভেটকার দিয়ে নেওয়ার পথে ভাওরাইদ স্কুলের সামনে গাড়ি নষ্ট হয়। মনে হচ্ছিল—এত বড় মানুষ অথচ কোনো অ্যাম্বুলেন্স বা বিকল্প নেই—এটাই রাষ্ট্রের করুণ চিত্র। পরে পিক-আপ যুগে তাঁকে নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিক এছাড়া উপায় ছিল না।”

আব্দুস সাত্তার শান্ত বলেন:
“সকাল সাড়ে দশটায় আমার স্কুলে এসে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন। এমন কিছু উপদেশ দিলেন, যা আমার শিক্ষকতা জীবনের দিকবদল ঘটাবে।”

দোয়া মাহফিল

সভা শেষে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের খতিব মাওলানা মো. মনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, “একজন মানুষ যে কতজনের ভালোবাসা ও দোয়ার কারণ হতে পারেন—সাঈদুর রহমান রিমন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসে মর্যাদা দান করেন।”

একটি শূন্যতা, একটি যুগের অবসান

বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হারাল একজন অগ্নিকণ্ঠ। সাহস, সততা ও শুদ্ধতার প্রতীক ছিলেন সাঈদুর রহমান রিমন। তাঁর জীবনের প্রতিটি অনুসন্ধান ছিল সমাজের অন্ধকারে একটি প্রদীপ জ্বালানো। তিনি ছিলেন লুটেরাদের আতঙ্ক, শোষকের মুখোশ উন্মোচনের যন্ত্র। তাঁর স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠান কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়—এ যেন কলমের কান্নায় গাঁথা প্রতিরোধের আলেখ্য।

সাঈদুর রহমান রিমন ছিলেন, আছেন, এবং থাকবেন সাংবাদিকতার হৃদপিণ্ডে—এক অনল জাগানিয়া নাম।
তাঁর চলে যাওয়া কেবল একজন মানুষের মৃত্যু নয়, একটি যুগের অন্ত্য।
বাংলাভূমি পরিবারের আয়োজনে গড়া এই আয়োজন ছিল শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কান্না আর সংগ্রামের এক ব্যতিক্রমী সংলাপ।