রাম বসাক, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ: মহামারীর কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে কবির জন্মদিন। কবির স্মৃতিবিজড়িত কাচারিবাড়ি সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী রোববার সকালে তিন দিনের এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন। উৎসবের এই তিন দিন দেশি বিদেশি রবীন্দ্রভক্তদের পদচারণায় শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি মুখরিত থাকবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
কেবল কাচারিবাড়ি নয়, পুরো শাহজাদপুরে চলছে উৎসবের আমেজ। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে গত কয়েক দিন ধরেই চলছে গান, নাচ, নাটকসহ বিভিন্ন পরিবেশনার মহড়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের সংগীত ও রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল জানান, কবির স্মৃতিবিজরিত শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর এটি কবির প্রথম জন্মবার্ষিকী উদযাপন। এই আয়োজন সফল করতে শিল্পীরা রাত-দিন অনুশীলন করেছেন।
শাহজাদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, “রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পুরো শাহজাদপুরে এখন উৎসবের আবহ। সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে।”
জমিদারি দেখাশোনার কাজে কবিগুরু ১৮৯০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম শাহজাদপুরে আসেন। ১৮৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি এখানে এসেছেন, থেকেছেন।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে নীলকরদের কুঠি ছিল বলে শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি ‘কুঠিবাড়ি’ নামেও পরিচিত। তিন তৌজির অন্তর্গত ডিহি শাহজাদপুরের জমিদারি পরে নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারির অংশ ছিল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪০ সালে এই জমিদারি নিলামে কিনে নেন। প্রায় ১০ বিঘা জমিসহ ওই কুঠিবাড়ি তখন ঠাকুর পরিবারের হাতে আসে।
শাহজাদপুরে এসে লেখা রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু কাব্য ‘সোনার তরী’ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি কিছু গান, নাটক ও ছোটগল্পও তিনি রচনা করেন কাচারিবাড়িতে বসে।
ঠাকুর পরিবারের জমিদারি ভাগাভাগি হলে শাহজাদপুরের জমিদারি চলে যায় অন্য শরিকদের হাতে। ১৮৯৭ সালের পর কবি আর শাহজাদপুর আসেননি।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সাংসদ মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের মন ও মননের কবি। তিনি আমাদের নিদ্রাহীন রাতের সঙ্গী। শাহজাদপুরবাসীর জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রচণ্ড প্রভাব রয়েছে। সে কারণে কবির জন্মবার্ষিকী পালন নিয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ কাজ করছে।”