চাঁদপুরে অভিযান চালিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুদকের কুমিল্লার সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ-এর নেতৃত্বে একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।
দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিযানকালে দুদকের টিম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় চাঁদপুর-হাইমচর সড়কের পাশে মেঘনা নদী থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, বিআইডব্লিউটিএ ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন থেকে অভিযোগ সম্পর্কিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।
সংগৃহীত রেকর্ডপত্রে চাঁদপুর জেলার পদ্মা-মেঘনা নদী অংশে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রকৃতি-পরিবেশ বিনষ্টসহ রাজস্ব ক্ষতি এবং প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকারের বিরাট অঙ্কের অর্থ লুটপাটের দুরভিসন্ধি সম্পর্কিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শিগগিরই দুর্নীতি দমন কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য যে স্থান ঠিক করা হয়েছে, তার বেশির ভাগের মালিক চাঁদপুর সদরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম খান ও তাঁর স্বজনেরা। তিনি চাঁদপুরে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ভূমি অধিগ্রহণে এসব জমির দাম মৌজা দরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি দেখিয়ে সরকারের কাছ থেকে ৩৫৯ কোটি টাকা বাড়তি নেওয়ার কারসাজির বিষয়টি জেলা প্রশাসনের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে গত ২৭ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘মন্ত্রী–ঘনিষ্ঠদের দুর্নীতির জাল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়া সেলিম খান প্রায় আট বছর ধরে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ডুবোচর থেকে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে বালু তুলছেন। এর ফলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্যের অপূরণীয় ক্ষতি এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়েও গত ২ মার্চ প্রথম আলোয় ‘বালুখেকো চেয়ারম্যান তিনি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত গত সোমবার সেলিম খানকে বালু তোলার অনুমতি দিয়ে চার বছর আগে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেন।