ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ধাক্কার আশঙ্কায় তেল ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেট্রোলের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১৩৯ ডলারে পৌঁছেছে। যা প্রায় ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ান তেল কেনার উপর নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে ইউরোপীয় নেতারা সোমবার সেই ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন যে ইউরোপ রাশিয়ান তেলকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রেখেছে। কারণ এর বিকল্প এখনো কোনো কিছু পাওয়া সম্ভব নয়।
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেছেন, ‘বেদনাদায়ক বাস্তবতা হল আমরা এখনও রাশিয়ান গ্যাস এবং রাশিয়ান তেলের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল এবং আপনি যদি এখন ইউরোপীয় কোম্পানিগুলিকে রাশিয়ার সাথে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন, তাহলে ইউক্রেনসহ ইউরোপে বিশাল প্রভাব পড়বে।’
তেল ছুঁতে পারে ৩০০ ডলারে: পশ্চিমাদের হুঁশিয়ারি রাশিয়ার
ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্যাস সরবরাহ কমালে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৩০০ ডলার ছোঁবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। এছাড়া রাশিয়া-জার্মানির গ্যাস পাইপলাইনও বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলো যদি রাশিয়ার থেকে জ্বালানি সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তাদেরকে মহা সমস্যায় পড়তে হবে এমন সতর্ক করেন রাশিয়ার একজন সিনিয়র মন্ত্রী।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে, ওয়াশিংটন এবং ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিবেচনা করছে। তার এই ঘোষণার পরই ২০০৮ সালের পর থেকে তেলের দাম সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।
রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটা একেবারেই পরিষ্কার যে রাশিয়ার তেল প্রত্যাখ্যান বিশ্ব বাজারে বিপর্যয়কর পরিণতি ঘটাবে। দামের বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত হবে। প্রতি ব্যারেল ৩০০ ডলার হবে।’
নোভাক বলেছেন যে, রাশিয়া থেকে প্রাপ্ত তেলের জায়গায় অন্য কাউকে বসাতে হলে এক বছরেরও বেশি সময় লাগে। এক্ষেত্রে তাদেরকে উল্লেখযোগ্য উচ্চ মূল্য দিতে হবে।
নোভাক বলেছেন, ‘ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের সততার সঙ্গে তাদের নাগরিকদের এবং ভোক্তাদের বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি সরবরাহ প্রত্যাখ্যান করতে চান, এগিয়ে যান। আমরা এর জন্য প্রস্তুত। আমরা জানি যে আমরা এটি কোথায় বিক্রি করবো।’
গত মাসে জার্মানি নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর রাশিয়া বলছে এর প্রতিশোধ হিসেবে নর্ড স্ট্রিম-১ বন্ধ করার অধিকার রয়েছে তাদের। তবে এখনই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নোভাক। তিনি সতর্ক করেছেন পশ্চিমাদের রুশ বিরোধী বিবৃতি ও অভিযোগ সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য রাশিয়াকে বাধ্য করতে পারে।