তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৩০৪ রানের বড় লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে স্বাগতিক দল। কিন্তু চতুর্থ উইকেট জুটিতে ওপেনার ইনোসেন্ট কাইয়া ও সিকান্দার রাজার ১৯২ রানের জুটিতে জয়ের ভীত পেয়ে যায় রোডেশিয়ানরা। দুই জন ব্যাটার শতকের দেখা পেয়েছেন। রাজা ও কাইয়ার ব্যাটিং দক্ষতায় ১০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় পায় স্বাগতিকরা।
এদিকে ‘ক্যাচেস উইন ম্যাচেস’- ক্রিকেটের প্রচলিত প্রবাদটা যে সত্য, তার প্রমাণ আবারও মিললো হারারেতে। ক্যাচ মিসে বাংলাদেশ এমন দুজনকেই জীবন দিলো, যাদের আধিপত্যে পরে ম্যাচ থেকেই ছিটকে গেছে সফরকারী দল। প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের কাছে ৫ উইকেটে হারের লজ্জায় ডুবেছে তামিম ইকবালের দল। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের কাছে সর্বশেষ ওয়ানডে হেরেছিল ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে।
অথচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর প্রিয় ওয়ানডে ফরম্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশাই করা হচ্ছিল। প্রথম দুই ওভারে মোস্তাফিজ-শরিফুল দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে শুরুর কাজটা ভালো মতোই করেছিল। প্রাথমিক ধাক্কার পর মাধেভেরে-কাইয়ার ৫৬ রানের জুটিও অতটা বিপজ্জক মনে হচ্ছিল না। মাধেভেরের রান আউটে ভাঙে এই জুটি। কিন্তু এর পরেই যে সিকান্দার রাজা-ইনোসেন্ট কাইয়া জুটি অসাধ্য সাধন করবেন তা কে ভেবেছিল? অবশ্য ম্যাচের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে অবদান ছিল সফরকারীদের। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৩০৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে থাকা সিকান্দার রাজা ৪২ রানে ফিরতে পারতেন। তখন ২৭তম ওভার চলছিল। তাসকিনের শেষ বলে কভারে তাইজুল ক্যাচটা নিতে পারলে ম্যাচের ফলটা ভিন্ন হলেও হতে পারতো।
এমন ব্যর্থতার উদাহরণ বাংলাদেশ আরও রেখেছিল পুরো ম্যাচটায়। ৩২তম ওভারে শরিফুলের বলে ক্যাচ উঠেছিল কাইয়ার। কিন্তু থার্ড ম্যানে সেটি লুফে নিতে পারেননি তাসকিন। শেষ বলে তো কাইয়ার ক্যাচ মিস করেন শরিফুল নিজেই। যেসব ভুলের সুযোগে জয়ের পথে মেইডেন সেঞ্চুরি তুলে নিতে পেরেছেন কাইয়া। রাজা তো শেষ পর্যন্ত চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন।
কাইয়াকে ফিরিয়ে ম্যাচ জেতানো ১৯২ রানের জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক। ফেরার আগে ১১০ বলে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা ১২২ রান। পরে অবশ্য রাজা ৪৮.২ ওভারে ছক্কা মেরে নিশ্চিত করেছেন জয়। শেষ বেলায় জঙ্গোয়ের উইকেট নিতে পারলেও সেটি জয়ের পথে বাধা হতে পারেনি।
দুই দলের স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০৩/২ (তামিম ৬২, লিটন আহত অবসর ৮১, এনামুল ৭৩, মুশফিক ৫২*, মাহমুদউল্লাহ ২০*; এনগারাভা ১০-১-৬১-০, নিয়াউচি ১০-১-৭০-১, মাসাকাদজা ৫-০-৩১-০, জঙ্গুয়ে ১০-০-৫৬-০, বার্ল ১.১-০-৮-০, শুম্বা ৪.৫-০-২৭-০, রাজা ৯-০-৪৮-১, মাধেভেরে ১-০-৫-০)।
জিম্বাবুয়ে: ৪৮.২ ওভারে ৩০৭/৫ (চাকাভা ২, মুসাকান্দা৪, কাইয়া ১১০, মাধেভেরে ১৯, রাজা ১৩৫*, জঙ্গুয়ে ২৪, শুম্বা ১*; মুস্তাফিজ ৯-০-৫৭-১, শরিফুল ৮.৪-০-৫৭-১, তাসকিন ১০-১-৫২-০, মিরাজ ১০-০-৫৯-১, মোসাদ্দেক ৯.২-০-৬৭-১, মাহমুদউল্লাহ ১.২-০-১২-০)।