শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি মিললে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এবার সংস্থাটি ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেবে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের অক্টোবরে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এনটিআরসিএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, এখন ই-রিকুজিশন চলছে। এটি যাচাই-বাছাই শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও তিন অধিদপ্তরের মতামত নেয়া হবে। যেহেতু এমপিওর মতের সঙ্গে বিশাল অর্থছাড়ের বিষয় আছে। মন্ত্রণালয় সাড়া পেলে খুব দ্রুতই গণবিজ্ঞপ্তি দেয়ে হবে।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশের স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে। এবারের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের ফলে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সংকট দূর হবে।
সূত্র জানায়, অক্টোবর মাসে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চায় এনটিআরসিএ। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে প্রকাশের কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার কারণে এই বিপুল শিক্ষক নিয়োগ এখন দেয়া হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের।
চাকরি প্রত্যাশীরা বলছেন, ২০১৯ সালে প্রিলিমিনারি, এরপর লিখিত পরীক্ষা পাস করার পর এখনো নিয়োগ না পেয়ে সবাই খুব হতাশায় রয়েছেন। দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এরমধ্যে শিক্ষক হওয়ার সর্বোচ্চ বয়স অতিক্রম করে ফেলেছেন অনেকে। তাই খুব শিগগির এই বিজ্ঞপ্তির কোনো বিকল্প নেই। এছাড়াও গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পুলিশ ভেরিফিকেশ ও এমপিও করতে কমপক্ষে আরও ৬ মাস সময় লাগবে।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী রাশেদুল ইসলাম বলেন, তিন ধাপে পরীক্ষা নিয়েও এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। এরমধ্যে ৮ হাজার শিক্ষকের বয়স ৩৫ অতিক্রম করেছে। অথচ এনটিআরসিএ’র নীতিমালায় ২ মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করার কথা। এই বিষয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে লিখিত একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ এনটিআরনিএ চেয়ারম্যান এপ্রিলে গণবিজ্ঞপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এনটিআরসিএ কলেজ পর্যায়ে ১০০ জনে এক জন পাস করেন। আমি কলেজের নিবন্ধনধারী। আমার বয়স ৩৪ পেরিয়ে গেছে। তিন ধাপে পাস করার পর আমি যদি গণবিজ্ঞপ্তির কারণে আবেদন না করতে পারি তবে ভেবে দেখেন আমার কি হবে!
এদিকে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ ধাপে শিক্ষক নিয়োগের জন্য দেয়া শূন্যপদের তথ্য সংশোধনের সুযোগ দিয়েছে এনটিআরসিএ। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) থেকে শূন্যপদের তথ্য সংশোধন শুরু হয়েছে, যা ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। ২৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শূন্যপদের তথ্য মাঠ পর্যায়ের উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। এরপর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শূন্যপদের তথ্য যাচাই করবেন। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছেন তারা।
আবেদন প্রক্রিয়া কেমন হবে এ বিষয়ে এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, সিস্টেম তো একই থাকবে। অনলাইনে আবেদন, অনলাইনে প্রসেস, যিনি মেধা তালিকায় আগে থাকবেন তিনিই নিয়োগ পাবেন। কোনো নতুন সিস্টেমের সুযোগ নেই এখানে। তবে শিক্ষকদের ভুল চাহিদা না থাকে এর জন্য সফটওয়্যারের আধুনিকায়ন করা হবে। যার কাজ চলছে।
এনটিআরসিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সর্বশেষ তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৮ হাজার ৪৪৮টি পদে কোনো আবেদন না পাওয়ায় এবং ৬ হাজার ৭৭৭টি নারী কোটায় প্রার্থী না পাওয়ায় মোট ১৫ হাজার ৩২৫টি পদে ফলাফল দেয়া সম্ভব হয়নি। এ পদগুলো চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে যোগ করা হবে।
গত বছর ১৫ জুলাই রাতে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএ। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি থেকে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার ৬১০ জন এবং ননএমপিও প্রতিষ্ঠানে তারা তিন হাজার ৬৭৬ জনকে প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করেছে।সূত্র -বাংলাদেশ জার্নাল