অবশেষে সফল হতে চলেছে ‘আর্টেমিস ওয়ান’ রকেটের চন্দ্রাভিযান। তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় চাঁদের পথে রওনা দিয়েছে মহাকাশ যানটি। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বুধবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত ১টা ৪৭ মিনিটে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা করে আর্টেমিস। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।
এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তৃতীয় প্রচেষ্টা অবশেষে সফল হতে চলেছে। সফল উৎক্ষেপণ উদযাপন করতে নাসার পুরোনো প্রথা মেনে নিজের টাই কেটে ফেলেছেন মিশনের লঞ্চ ডিরেক্টর চার্লি-ব্ল্যাকওয়েল থম্পসন।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার মাইলের বেশি উচ্চতায় ঘণ্টায় প্রায় ২০ হাজার মাইল গতিতে চাঁদের দিকে ছুটে চলেছে আর্টিমিস ওয়ান মিশনের ওরিয়ন মহাকাশ যানটি। প্রায় ২১ লাখ কিলোমিটার দূরে চাঁদের ‘ডিস্ট্যাস্ট রেট্রোগেড অরবিট (ডিআরও)’-এর গন্তব্য।
এই মহাকাশ যানটিকে মানুষ বহনের উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ২৫ দিন ১১ ঘণ্টা চাঁদে পরিভ্রমণ করবে। পরে ১১ ডিসেম্বর ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার কিলোমিটার গতিতে ক্যাপসুলটিকে প্রশান্ত মহাসাগরের সান দিয়েগো উপকূলে ফিরিয়ে আনা হবে। এখান থেকেই চন্দ্র যানটিকে নিরাপদে সরিয়ে নেবে পুনরুদ্ধারকারী দল।
পুরো মিশনে নাসার বিজ্ঞানীরা মহাকাশ যানটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে চাঁদে মানুষ পাঠাবে নাসা।
নাসার পরবর্তী প্রজন্মের রকেট আর্টেমিস ওয়ান গত ২৯ আগস্ট প্রথমবার চাঁদে রওনা দেওয়ার কথা থাকলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে যাত্রা স্থগিত করা হয়। সেদিন রকেটটির প্রধান চারটি ইঞ্জিনের একটিতে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে যাত্রা বাতিল করা হয়।
এরপর দ্বিতীয় চেষ্টা চালানো হয় ৩ সেপ্টেম্বর। সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। ওই সময় জ্বালানি ট্যাঙ্ক ছিদ্র হওয়ায় মিশনটি বাতিল ঘোষণা করে নাসা।
অ্যাপোলো মিশনে চন্দ্রপীঠে অবতরণের ৫০ বছর পর আবারও মানুষকে চাঁদে নিয়ে যেতেই নাসার এই অভিযান, যার নাম দেওয়া হয়েছে মিশন আর্টেমিস ওয়ান। এ অভিযানকে নাসার মঙ্গল গ্রহে মানবযাত্রার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই মিশনের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে স্পেস লঞ্চ সিস্টেম, যাকে সংক্ষেপে এসএলএস বলা হচ্ছে। এটাই এখন পর্যন্ত নাসার সবচেয়ে আধুনিক মহাকাশ যান। এক দশকের বেশি সময় ধরে এসএলএস রকেটটি তৈরি করা হয়েছে। এটিকে সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট হিসেবে উল্লেখ করেছে নাসা।