মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানো পর দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠল আফিফ-মিরাজের ব্যাট। রেকর্ড গড়া জুটিতে আফগানদের দেওয়া ২১৬ রানের টার্গেট পূরণ করে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে টাইগাররা।
ম্যাচে আফিফ ১১৫ বলে ৯৩ রান ও মিরাজ ১২০ বলে ৮১ রান করেন।
আফগানিস্তানের ২১৫ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ফজল হক ফারুকির তোপে পড়ে বাংলাদেশ। এক রান করা লিটন দাসকে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। দলীয় ১৪ রানের মাঝে ফিরে যান তামিম ইকবালও।
প্রথমে লেগ বিফোরের আবেদন নাকচ করে দিলেও পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ককে বিদায় করেন ফারুকি। তিন রান করা মুশফিকুর রহিমকেও লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এই পেসার। তারপর উইকেটে আসেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। মাত্র পাঁচ বল মোকাবেলা করলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। তাকেও বোল্ড করে ফেরান ফারুকি।
আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন সাকিব আল হাসানও। গেল বিপিএলে ফরচুন বরিশালে তার সতীর্থ হয়ে খেলা মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হন সাকিব।এরপর প্রথমে বোলিং করতে এসেই ওভারের দ্বিতীয় বলে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফেরান রশিদ খান। ৮ রান করে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
দলীয় ৪৫ রানে নেই টপঅর্ডারের ৬ উইকেট হারানোর পর রেকর্ড জুটি গড়ে বাংলাদেশকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সপ্তম উইকেট জুটিতে তারা ১৭৪ রানে অপরাজিত থেকে দেশীয় রেকর্ড গড়েন। চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়া আফিফ অপরাজিত থাকেন ৯৩ রানে। তার ১১৫ বলের অসাধারণ ইনিংস গড়া ১১ চার ও এক ছক্কায়। বল হাতে আলো ছড়ানো মিরাজ ৯ চারে ১২০ বলে করেন ৮১ রান। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে উইকেটে জয় এনে দেন বাংলাদেশের লড়াকু এই দুই তরুণ।
এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০তে।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে টসের লড়াইয়ে জিতে তাই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক হশমতউল্লাহ শাহিদি। এদিন বাংলাদেশি পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ছিল দেখার মতো। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২টি করে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, সাকিব আল হাসান এবং শরীফুল ইসলাম। মিরাজ কোনো উইকেট না পেলেও ১০ ওভারে রান দিয়েছেন মাত্র ২৮। সমান ওভারে শরীফুল দিয়েছেন ৩৮ আর তাসকিন ৫৫ রান। আফগানদের হয়ে ৮৪ বলে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন নাজিবুল্লাহ জারদান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রহমত শাহর।প্রথমে ব্যাটিং করে নাজিবউল্লাহ জাদরানের হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৯.১ ওভারে ২১৫ রানের পুঁজি পায় আফগানিস্তান।
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে এটি বাংলাদেশের নবম জয়। আফগানদের প্রথম হার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৮.৪ ওভারে ২১৯/৬ (তামিম ৮, লিটন ১, সাকিব ১০, মুশফিক ৩, ইয়াসির ০, মাহমুদউল্লাহ ৮, আফিফ ৯৩* , মিরাজ ৮১* ; ফারুকি ৪/৫৪ , মুজিব ১/৩২ , ইয়ামিন ০/৩৫, রশিদ ১/৩০, নবি ০/৩২, নাইব ০/২১)
আফগানিস্তান: ৪৯.১ ওভারে ২১৫ (গুরবাজ ৭, জাদরান ১৯, রহমত ৩৪, হাসমতুল্লাহ ২৮, নাজিবুল্লাহ ৬৭ , নবি ২০, নাইব ১৭, রশিদ ০, মুজিব ০, ইয়ামিন ৫, ফারুকি ০* ; মোস্তাফিজ ৩/৩৫, তাসকিন ২/৫৫, সাকিব ২/৫০, শরিফুল ২/৩৮, মিরাজ ০/২৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৪)
ফল: বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ।