আব্দুর রহিম (সাতক্ষীরা) জেলা প্রতিনিধি :
অবৈধভাবে নিজেদের নামে দোকান বরাদ্দ নেওয়ার প্রতিবাদ করা ও দুর্নীতির প্রশ্রয় না দেওয়ায় দুই বারের নির্বাচিত পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন ১০ জন কাউন্সিল। বিশেষ করে কাউন্সিলরদের দুর্নীতির প্রমান মেয়রের হাতে আসায় নিজেদের রক্ষায় মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রোববার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোত্তালেব মিলনায়তনে এ অভিযোগ করেন, সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি ফরিদা আক্তার বিউটি, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ জাহান শীলা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আব্দুস সামাদ, ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আ: জলিল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান পলাশ, সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন বাবু, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নাছির উদ্দীন,
৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন মধু, ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জহুরুল হক, আব্দুল হাকিম প্রমুখ।
লিখিত অভিযোগে তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, আমি টানা দুইবার বিপুল ভোটে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি জনগনের উন্নয়নের কাজ করাটাই লক্ষ্য। মেয়র হিসেবে পৌর কর, ট্রেড লাইসেন্স, পানির বিল মওকুফ ইতোপূর্বে যে সব মেয়র মহোদয়রা ছিলেন তারাও করেছেন। আমিও পৌর বিধি অনুযায়ী এবং পূর্বের মেয়রদের সাথে সামঞ্জতা রেখেই অনুদান এবং বিল মওকুফ করেছি। কোন ধরনের অনিয়ম আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তবে পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ আমার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পেরে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমি মনে করি কাউন্সিলরবৃন্দ যে অভিযোগ করেছেন,
সেটি মেয়রের বিরুদ্ধে করেনি। সাতক্ষীরা পৌরসভার জনগনের বিরুদ্ধে করেছেন, নিজেদের বিরুদ্ধে করেছেন। বিশেষ করে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা অনৈতিকভাবে নিজের নামে ৬টি দোকান বরাদ্দ নিয়েছেন। তার ভাগ্নে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিমেল তার বাবা এবং মায়ের নামে অনৈতিকভাবে আরো ২টি দোকান বরাদ্দ রেখেছেন। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপর ক্ষুদ্ধ। এছাড়া ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌর প্যানেল মেয়র(১) কাজী ফিরোজ হাসান দীর্ঘদিন ধরে আমাকে সরিয়ে নিজে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। যাতে তারা পৌরসভায় অনিয়ত দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করতে পারেন। সেকারনে গভীর চক্রান্ত করছেন তারা। আমি মেয়র থাকতে পৌরসভায় কোন অনিয়ম হতে দেবো না।
তিনি এবিষয়ে সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এদিকে, সাতক্ষীরা পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১০ জন কাউন্সিলর গত ১৩ জানুয়ারী মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে অভিযোগ উত্থাপন করেন। অভিযোগ প্রাপ্তি পর গত ২৪ জানুয়ারী ২০২২ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সরজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য জেলা প্রশাসক,সাতক্ষীরাকে অনুরোধ জানানো হয়। পরবর্তীতে তদন্তভার অর্পণ করা হয় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালককে। সে মোতাবেক সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির তদন্ত করছেন সাতক্ষীরার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস।
০৪ নংওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান বলেন,কমপক্ষে ১০টি খাতে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে কারো সাথে পরামর্শ না করে গরীব মানুষদের আর্থিক সাহায্য বাবদ ১ কোটি ৮ লাখটাকা আত্মসাৎ,ব্যক্তিস্বার্থে ৮০ লাখ টাকার পানির বিল মওকুফ,ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পৌরসভার টাকায় গাড়ীর তেল ক্রয়সহ প্রমোদ ভ্রমণ, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পৌর সভার আর্থিক ক্ষতিসাধন,পৌরসভার বিভিন্ন হাট-বাজার বিধি ভঙ্গ করে ইজারা প্রদান এবং অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণের নিমিত্তে বাজেট ব্যতীত টেন্ডার প্রদান উল্লেখযোগ্য।