ক্রিকেট যে কতোগুলো দেশ খেলছে তাতে উপরের সারির সবগুলো দলই এশিয়ার। আইসিসি পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর কথাই চিন্তা করুন। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান প্রত্যেকেই তো এখন আইসিসির পূর্ণ সদস্যের দেশ। এই পাঁচ দলের সঙ্গে হংকংকে নিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘এশিয়ার বিশ্বকাপ’।
মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা এবার বসছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। মরুর বুকে তপ্ত পরিবেশে বাজছে এশিয়া কাপের দামামা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেই হচ্ছে মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতা। তাইতো চার-ছক্কার উত্তাপ একটু বেশি ছড়িয়ে পড়েছে।
১৫তম আসরের প্রথম ম্যাচ খেলতে রাত আটটায় মাঠে নামছে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। ‘বি’ গ্রুপের তাদের অপর প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে রয়েছে হংকং।
প্রতিযোগিতা মাঠে গড়ানোর আগে নানা জটিলতা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শুরু হচ্ছে ব্যাট-বলের যুদ্ধ। কোভিডের কারণে ২০১৮ সালের পর এবার এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূল আয়োজক ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এসিসি সেখানে টুর্নামেন্ট আয়োজন নিরাপদ মনে করেনি। এজন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেছে নেয়। দুবাই ও শারজাহতে ম্যাচ আয়োজন হলেও এসিসি ৬৫ লাখ ডলার দেবে শ্রীলঙ্কাকে।
দুর্দিনে বিশাল অঙ্কের অর্থ শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের জন্য বিশাল প্রাপ্তি। দাশুন শানাকাদেরও বিশাল কিছু পাওয়ার সুযোগ আছে। এবার চ্যাম্পিয়ন হলেই মিলবে ২ কোটি ডলার। তবে সেদিকে নজর রেখে টুর্নামেন্টে এগিয়ে যাওয়া স্রেফ বোকামি। ধাপে ধাপে এগোতে হবে। জিততে হবে সবকটি ম্যাচ।
আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচটা হতে পারে বোলারদের আসল লড়াই। একদিকে লঙ্কান সেনশেনাল ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, আছেন মাহিশ থিকশানা, প্রবীণ জয়বিক্রমা, জেফরি ভ্যান্ডার্সে। অন্যদিকে আফগানের রয়েছে লেগস্পিনার রশিদ খান, অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী নূর আহমেদ এবং মুজিব উর-রহমান। সঙ্গে দুই পেসার নাভিন উল হক ও ফজল হক ফারুকীও বেশ কার্যকর।
নিজেদের বোলিং নিয়ে আফগানিস্তান বেশ আত্মবিশ্বাসী। তাদের যত ভাবনা ব্যাটিং নিয়ে। দলের সহ অধিনায়ক ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাই বলেছেন,‘ আমাদের মনোযোগ ব্যাটিংয়ে। বিশেষ করে টপ অর্ডারে। লোয়ার অর্ডারে আমাদের বিগ হিটার রয়েছে যারা নিজেদের দিনে ভয়ংকর হতে পারে। আমরা শুরুর চাপ সামলে নিতে পারলে ভালো করবো।’
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার কোচ ক্রিস সিলভারউড ছেলেদের পুরো ম্যাচে মনোযোগ রাখতে বলেছেন,‘আরব আমিরাতে সফল হতে হলে কী করতে হবে সেই ব্যাপারে আমরা অবগত। আমাদের দলের বেশ কয়েকজনের এখানে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। টুর্নামেন্ট জেতার জন্য নিজেদের সেরাটা দিতেই এখানে এসেছি আমরা।’
দুই দলেরই শেষ কয়েক ম্যাচে জয়-পরাজয়ের মিশ্র অভিজ্ঞতা রয়েছে। শ্রীলঙ্কা শেষ ম্যাচে জিতেছে কেবল একটি। আফগানিস্তানের তিনটি পরাজয়। দুটি জয়। জয়ের ধারাবাহিকতা নেই কারোই। ফলে যে দল আজ ভুল কম করবে বিজয়ের মালা তারাই পরবে বলার অপেক্ষা রাখে না।
আগের ১৪ এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপার স্বাদ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। তিনবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি বাংলাদেশ। দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তান। এবার কি নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন পাবে ‘এশিয়ার বিশ্বকাপ’? নাকি পুরোনো শোকেসেই উঠবে নতুন ট্রফি? উত্তরটা জানা যাবে, ১১ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের ফাইনালে।