আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি জানানোসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
শবিনার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে সকালে ২২ দল আর বিকালে ২২ দলের সঙ্গে আলোচনার সময় নির্ধারিত রয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা ওই সভায় উপস্থিত থাকবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আহ্বানকৃত ওই সভায় আপনার দলের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আপনাদের কর্তৃক মনোনীত দুই জন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ২২টি দলকে সকাল ১০টা এবং বিএনপিসহ ২২টি দলকে বেলা ৩টায় আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সকালে আমন্ত্রিত দলগুলো হলো: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ইসলামী ঐক্যজোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), তৃণমূল বিএনপি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলাময়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণতন্ত্রী পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ),গণফ্রন্ট, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
বিকালে আমন্ত্রিত দলগুলো হলো: বিএনপি, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)।
সভায় বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবি, বাসদসহ আরও কয়েকটি দল অংশ নেবে না বলে দলীয় সূত্রগুলো গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির মহাসচিবকে পাঠানো চিঠি গত বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলটির তালাবদ্ধ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের ফাঁক গলিয়ে ভেতরের একটি চেয়ারে রাখা হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে বলা হয়েছে, তারা এ আলোচনায় অংশ নেবে না। দলটির আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম গতকাল শুক্রবার এক সমাবেশে বলেছেন, ‘১০ নভেম্বরে মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করে এবং জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে সকল নিবন্ধিত এবং প্রতিনিধিত্বশীল আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।’
তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, তাদের ১৪ দলীয় জোটের শরিকসহ বেশিরভাগ দলই অংশ নেয়ার পক্ষে। সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া নতুন দলগুলো অংশ নেবে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দলটির পক্ষে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ আলোচনা সভায় যোগ দেবেন।
আলোচনায় অংশ নিতে দলগুলোকে সমমনা বা বিরোধী বিবেচনায় ভাগ করেনি নির্বাচন কমিশন। তারা সকালের বৈঠকে যেসব দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সেসব দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং বর্তমান ব্যবস্থায় নির্বাচনবিরোধী দল রয়েছে। আবার বিকালেরে আলোচনায় যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের দলও রয়েছে।