মন্ত্রী বান্দরবানের রুমাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন। এ সময় তিনি বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। শনিবার দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে মতবিনিময় শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন তিনি।
ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে যাবেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
এদিকে, অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পর সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলছে, ব্যাংক ম্যানেজারকে নিরাপদে উদ্ধারে কোনো ঝুঁকি নেননি সদস্যরা। গোয়েন্দা কার্যক্রমের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে একটি কৌশল অবলম্বন করে তাকে উদ্ধার করা হয়।
গত মঙ্গলবার রাত ও বুধবার দুপুরের মধ্যে ১৭ ঘণ্টায় বান্দরবানের তিন উপজেলায় তিন সরকারি ব্যাংকে ডাকাতি, ১৪টি অস্ত্র লুট, তল্লাশি চৌকিতে হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণ করা হয়। এর জের ধরে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চলছে। অভিযানে অংশগ্রহণকারী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলার সম্ভাব্য স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রায়হান কাজেমী জানান, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) কর্তৃপক্ষের কাছে আরও ৪০০ পুলিশ সদস্য চাওয়া হয়েছে। তারা ওই এলাকাগুলোয় বিদ্যমান পুলিশের সঙ্গে যুক্ত হবে।
জানা গেছে, বান্দরবান জেলা সদর এবং রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) টহল দিচ্ছে। এলাকাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্পর্শকাতর পয়েন্টে রাখা হয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী ও বিজিবিকে। স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল ধারণা করছে, বড় ধরনের একটি সাঁড়াশি অভিযানের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে এসব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর আগে গত বছরে র্যাব পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও মৌলবাদ বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র বিপুলসংখ্যক অনুসারী ও শীর্ষ নেতাকে আটকের পর বান্দরবানের দুর্গম এলাকায় কেএনএ’র সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনগুলোর গড়ে ওঠা নেটওয়ার্ক অনেকটা ভেঙে যায়। স্থানীয়দের ধারণা, এবারের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান এ অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসীদের নির্মূলে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে র্যাব।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, কেএনএফ নির্মূল পর্যন্ত এ যৌথ অভিযান চলবে। এতে বলা হয়, সন্ত্রাসীদের দমনে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতো সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের সহকারী পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গত কয়েক দিনে ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার দুটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে। প্রথমত, টাকা লুটপাট ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়া। দ্বিতীয়ত, সক্ষমতা প্রদর্শন করা। তিনি বলেন, ‘কেএনএফ তাদের সমর্থক ও প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দেখাতে চাইছে, তারা যথেষ্ট শক্তিশালী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাদের সন্ত্রাসীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ লক্ষ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি কাজ করছিল। কিন্তু সে সুযোগে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্র লুট, পুলিশ ক্যাম্পে গুলিবর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে।