ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) ১৮৩টি দেশের কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস-২০২৩ পালিত হচ্ছে। এবারের কাস্টমস দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লালন : কাস্টমসে জ্ঞানচর্চা ও উত্তম পেশাদারিত্বের বিকাশ।’
আর কাস্টমস দিবসের মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বিশ্ব অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে আমদানি-রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখা; সরবরাহ চেইনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে জনগণ ও বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে সচল রাখা; সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যকার সহযোগিতার মনোভাব জোরদার করা এবং নীতিগত ও পদ্ধতিগতভাবে সর্বক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির আত্মীকরণের মাধ্যমে ব্যবসা ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। বৈশ্বিক মহামারির কারণে এবারে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস কিছুটা স্বল্প পরিসরে পালিত হচ্ছে। সে কারণেই এবারে র্যালি আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে।
তবে দিবসটি উপলক্ষ্যে সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপাসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুমে আয়োজিত সেমিনারে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বিশেষ অতিথি এবং এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সেরা কর্মকর্তাদের সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নসহ নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে টেকসই অর্থনীতি বিনির্মাণে বাংলাদেশ কাস্টমস অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে জ্ঞান চর্চা এবং পেশাগত উৎকর্ষ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ কাস্টমস দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও বেশি অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাস্টমস এখন রাজস্ব আহরণ ছাড়াও ট্রেড ফেসিলিশন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকে। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট রাজস্বের ৪৪ হাজার ৯৫০ কোটি ৭২ লাখ টাকা বাংলাদেশ কাস্টমস থেকে এসেছে। গত অর্থবছরের তুলনায় যার প্রবৃদ্ধির হার ৯.২৫ শতাংশ।
প্রতি বছরের ন্যায় বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশে একযোগে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাজেশন ২৬ জানুয়ারিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকে বাংলাদেশ দিবসটি উদযাপন করছে।
১৯৫০ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্রাসেলসে কাউন্সিল অব কাস্টমস কো-অপারেশন (সিসিসি) গঠিত হয়। দুই বছর পর ১৯৫২ সালের ৪ নভেম্বর শুরু হয় এর কার্যক্রম। ১৯৫৩ সালের ২৬ জানুয়ারি এর প্রথম সেশনে ইউরোপের ১৭টি দেশ উপস্থিত ছিল। সেসব দেশ বিশ্বব্যাপী এর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সূচনা করে।
১৯৯৪ সালে কাউন্সিল অব কাস্টমস কো-অপারেশনের নাম পাল্টে গঠিত হয় ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাইজেশন (ডব্লিউএইচও)। বর্তমানে ১৮৩টি দেশ এ সংগঠনের সদস্য। এ সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে ১৯৩টিতে উন্নীতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।