ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের ১৩তম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান-ইংল্যান্ড। আফগানিস্তানের দেয়া ২৮৫ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলার আগেই গুটিয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের ইনিংস। আফগান বোলিং তোপে ৪০.৩ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ইংলিশরা সংগ্রহ করে ২১৫ রান। ফলে ৬৯ রানের বড় ব্যাবধানে হেরেছে ইংল্যান্ড।
আফগানিস্তানের দেয়া ২৮৫ রানে টার্গেট ইংল্যান্ডের হয়ে উদ্বোধনে মাঠে নামেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। দেখে-শুনে খেলতে গিয়ে দলীয় ১.১ ওভারের ফজল হক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরে যান জনি বেয়ারস্টো। এরপর মাঠে নামেন জো রুট। দেখে-শুনে খেলতে গিয়ে দলীয় ৬.৫ ওভারে মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরে যান জো রুট। যাওয়ার আগে ১৭ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। রুট চলে যাওয়ার আফগানিস্তানের বোলাদের দেখে-শুনে খেলতে থাকেন ওপেনিংয়ে নামা ডেভিড মালান। দলীয় ১২.৪ ওভারের মোহাম্মদ নবীর বলে ভুল করে বসেন মালান। এলবিডব্লিউ ফাঁদে পড়ে সাঝঘরে পথে ফিরে তিনি। এ সময় তিনি করেন ৩৯ বলে ৩২ রান।
মালান চলে যাওয়া ইংল্যান্ড শিবিরে আরো চাপ বাড়তে থাকে। দলীয় ১৭.২ ওভারের নাভিন উল হকের বলে ভুল করে বসেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। ইংলিশ এই অধিনায়ক দুই অংকের ঘরই পার করতে পারেনি। এমন সময় দেখে-শুনে খেলতে গিয়ে নাভিন উল হকের বলে ব্যক্তিগত ১৮ বলে ৯ রানে করে বোল্ড হয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। এর কিছুক্ষণ পর রশিদ খানের বলে ১০ রান করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন লিয়াম লিভিংস্টোন।
দলীয় ২৭.১ ওভারে আবারো ইংল্যান্ড শিবিরে আবারো আঘাত হানেন নবী। তার বলে আজমতউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাঝঘরে ফিরেন কুরান। ২৩ বলে ১০ রান করে ইংলিশ এই অলরাউন্ডার। কুরান চলে যাওয়ার পর পিচে থিতু হতে পারেননি ক্রিস ওকস। দলীয় ৩২.৬ ওভারের মুজিব উর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন ২৬ বলে ৯ রান করে আউট হন ক্রিস।
দলের হয়ে ৬১ বলে ৭টি চার আর এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন হ্যারি ব্রুকস। এছাড়া ৩২ রান করেন ওপেনার ডেভিড মালান।
আফগানিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান। দুই উইকেট নেন মোহাম্মদ নবি। একটি করে উইকেট নেন পেসার নাভিন উল হক ও ফজলহক ফারুকি।
এর আগে রোববার (১৫ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হয় ম্যাচটি।
টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। দুই ওপেনার গুরবাজ-জাদরানের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সপ্তম ওভারেই দলীয় অর্ধশতক পূরণ করে আফগানিস্তান। আর দলীয় শতকে পৌঁছায় মাত্র ১৩তম ওভারে। ওপেনিংয়ে নেমে শুরুটা দারুণ করে আফগানিস্তান। গুরবাজ ও ইবরাহিম দেখে-শুনে খেলতে থাকেন। তাদের দুই জনের জুটিতে দলীয় শতরান পার করে হাশমতউল্লাহ শাহিদির দল। এরই মধ্যে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে নিজের ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি পূর্ণ করেন গুরবাজ। দলীয় সপ্তম ওভারে আদিল রশিদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৩ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন তিনি।
দলীয় ১৬.৪ ওভারে আদিল রশিদের বলে জো রুটের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ইবরাহিম জাদরান। এ সময় তিনি করেন ৪৮ বলে ২৮ রান। তাতে ভেঙে যায় ১০১ বলে ১১৪ রানের জুটি। এরপর মাঠে নামেন রহমত শাহ। তিনিও বেশিক্ষণ পিচে টিকে থাকতে পারেননি। দলীয় ১৮.৪ ওভারে আদিল রশিদের বলে আউট হয়েছেন তিনি। ওই ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়েছেন পিচে থিতু হওয়া রহমানুল্লাহ গুরবাজ। যাওয়ার আগে তিনি করেন ৫৭ বলে ৮০ রান। এরপর মাঠে নামা আজমতউল্লাহ ওমরজাই বেশিক্ষণ পিচে টিকে থাকতে পারেননি। মাত্র ৭৬ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় আফগানস্তান।
সপ্তম উইকেটে জুটিতে রশিদ খানকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়েন ইকরাম আলি খিল। ২২ বলে ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৩ রান করে ফেরেন রশিদ খান।
এরপর মুজিব উর রহমানের সঙ্গে মাত্র ২৩ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ইকরাম। তিনি ৬৬ বলে তিনটি চার আর ২টি ছক্কার সাহায্যে ৫৮ রান করে ফেরেন।
দলীয় ২৭৭ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মুজিব। তার আগে মাত্র ১৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় খেলেন ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফজলহক ফারুকি আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ২৮৫ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।
ইংল্যান্ডের হয়ে তিন উইকেট নেন আদিল রশিদ। জোড়া উইকেট নেন মার্ক উড। একটি করে উইকেট নেন রিস টপলি,লিয়াম লিভিংস্টোন ও জো রুট।