সাতকানিয়া প্রতিনিধি ,মোহাম্মদ হোছাইন:
চট্টগামের সাতকানিয়ায় বিশ্বপরিচিত পাকিস্তানের সুস্বাদু রসালো ফল আবু ছুরা( মাল্টা) চাষ করে নিজ ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন সৌখিন ফল চাষী আবছার উদ্দিন(৩৬)।দারুন এক সম্ভাবনার স্বপ্ন নিয়ে নিজ মনের আশাকে পুজি করে স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এ তরুন উদ্যোগতা।আগামী ১০ বছর সময়কে টার্গেট করে নিজে সফল হওয়ার আশায় ও এলাকার বেকার শ্রমজীবিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তার এ পথ চলা।দেশে ও বিদেশে এ ফলের রয়েছে প্রচুর চাহিদা ও দাম। তাই প্রচুর লাভের সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি।
উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাইরতলি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে আবছার উদ্দিন।পেশায় তিনি একজন ইট,বালু,কংকর ব্যাবসায়ী।তিনি প্রায় সময় এলাকার লোকজনের জীবনমান উন্নয়নে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।সবসময় তিনি এলাকায় নতুন কোন চমক দেখাতে পছন্দ করেন।
হঠাৎ তার মনে হল দেশে ও বিদেশে পাকিস্তানি মাল্টা আবু ছুরার খুবই চাহিদা এবং দামও বেশি।এ ফলে এলাকায় চাষ করলে কেমন হয়।এ মানসিকতা থেকে বিগত ৪ বছর আগে সম্পুর্ন নিজ অভিজ্ঞতায় নিজ বাড়ির পশ্চিমে পাহাড়ি এলাকায় ৪ একর জমিতে গড়ে তুলেন আবু ছুরার চাষ।শুধু তাই নয় এ বাগানের পাশেই সমতল ভূমিতে রয়েছে বিশাল পেপে বাগান।
সরেজমিন গত ১৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকালে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মঙ্গলচাদ পাড়ার পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায় আবছার উদ্দিনের বিশাল আবু ছুরা( মাল্টা) বাগান।প্রায় ৪ একর জায়গায় সারি সারি করে লাগানো হয়েছে গাছগুলো।বাগানের সব গাছে ইতিমধ্যে যে পরিমাণ ফলন এসেছে তা সকলের নজর কাড়ছে। পুরো বাগানে রয়েছে লেবু,কমলা,আতা,পেপে,জাম্বুরা,আমলকি,লিচু,ফজলি, আম্রপালি, রুপালী আম,টক লেবু,পেপে বাগান।আরো রয়েছে শাক ও সবজির বাগান।তাছাড়া রয়েছে তেজপাতা,আদা,হলুদ ও বিভিন্ন জাতের মরিচ বাগান।
বাগান মালিক আবছার জানান,তাহার মাল্টা বাগানে ৩ জাতের মাল্টা গাছ আছে।গাছগুলোর বয়স কারো ২, কারো ৩, কারো ৫ বছর হবে।বেশিরভাগ গাছে যথেষ্ট ফলন আসছে।তিনি আরো জানান,বাগানের সম্পুর্ন গাছে পরিপুর্ন ফলন পেতে ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগবে।এবারের আবু ছুরাগুলো সম্পুর্ন পাকতে আরো এক মাস সময় লাগবে।বাজারে আবু ছুরার কেজি প্রতি বাজারদর ২৪০ টাকা।আর বিদেশে চালান দিতে পারলে প্রতি কেজির দাম পাবো ৪০০টাকা।১০টাকা দরে তেজপাতা লাগিয়ে এখন বস্তায় বস্তায় তেজপাতা বিক্রি করছি।সবদিক বিবেচনা করে সামনে এগোতে পারলে ভাগ্যবদল হবে ইনশাআল্লাহ। এ বাগান নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে।এ পর্যন্ত বাগানটি করতে তাহার ৪-৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।বাগানের কিনারা ঘেষে মৌসুমি সবজি চাষ করে পেয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক টাকা।লেবু বিক্রয় করেন প্রতিবছরে ১৫ হাজার টাকার উপরে।পেপে বিক্রিতো আছে সারা বছর। কিন্তু গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতের ঝড়ো হাওয়ায় আমার পেপে বাগান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমার অনেক টাকার পেঁপে নষ্ট হয়ে যায়
উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফজল করিম,যুবলীগ সভাপতি মো,আবদুল হালিম জানান,নতুন ধারার মাল্টাচাষী আবছার এলাকায় সবসময় ভিন্ন কিছু করে চমক সৃষ্টি করেন।এলাকায় তিনিই প্রথম আবু ছুরা চাষ করেছেন।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান,মাল্টা চাষী আবছারের বাগান আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি।লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারন ও ব্যবস্থাপনা উধপাদন প্রকল্পের পক্ষ থেকে তাকে লেবু জাতীয় ফসলের সহযোগীতাও করা হয়েছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মাল্টাচাষী আবছার সফল হবেই