মার্কিন ডলারের বিপরিতে আগের তুলনায় আরও কমেছে টাকার মান। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রিজার্ভ থেকে ডলারের বিনিময় হার ০.৫০ টাকা বাড়িয়ে ১১০.৫০ টাকা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে সর্বোচ্চ ২.৮৫ টাকা। এরপর থেকে আন্তঃব্যাংক ডলার হার অনুযায়ী রিজার্ভের ডলারের বিক্রয়মূল্য বাড়িয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে জুলাইয়ের শুরুতে রিজার্ভের ডলারের দাম দাঁড়ায় ১০৮.৮৫ টাকা।
গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রেমিট্যান্স, রপ্তানি ও আমদানি ব্যয় নিষ্পত্তিতে ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়ানো হয়। এর প্রভাবে পরের দিন সোমবার আন্তঃব্যাংক ডলার বিক্রির রেটও বেড়ে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নতুন ২০২৪ অর্থবছরে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে ১.৫২ শতাংশ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে, অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ১৬.৩২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির ক্ষেত্রে আন্তঃব্যাংক ডলার বিক্রির হারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই ধারাবাহিকতায় টাকার মান কমেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো বর্তমানে রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা পাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে সার এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের সরকারি আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার জন্য এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে, ব্যাংকগুলোকে মার্কেট থেকে ডলার সোর্স করে অর্থ পরিশোধের ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকায় কমে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিক্রি হয়েছে। ফলস্বরূপ, ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ নেমে এসেছে ২১.৭১ বিলিয়ন ডলারে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে। তবে, বাজারে ডলারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের অর্থবছরে ৭.৬২ বিলিয়ন ডলার কিনে রেখেছিল।
চলতি অর্থবছরে নতুন মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি একক ও বাজার-ভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে টাকা ও মার্কিন ডলার, কিংবা অন্য যেকোনো বৈদেশিক মুদ্রার মধ্যে বিনিময় হার বাজারের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।