নতুন করে দাম না বাড়লেও চালের বাজারে অনেক দিন ধরেই অস্থিরতা চলছে। আমনের ভরা মৌসুমে দেড় মাস আগে মিল পর্যায়ে বস্তায় (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা বাড়ানো হয় চালের দাম। এর প্রভাবে খুচরা বাজারে কেজিতে ৮-১০ টাকা বেড়ে যায়।
পরিস্থিতি এমন হয়েছে, এক কেজি সরু চাল কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। মাঝারি ও মোটা চালের কেজি গিয়ে ঠেকেছে ৫৫-৬৫ টাকা। ফলে চাল কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠেছে।
তবে খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম ক্রেতার নাগালে এসেছে। পাশাপাশি উচ্চমূল্যে বিক্রি হওয়া আলু খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৩০ ও পেঁয়াজ কেজিতে ৫০-৬০ টাকায় নেমেছে। এছাড়া বাজারে একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার, শানি্তনগর ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
শুক্রবার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয় ৮০-৮৫ টাকায়, যা দেড় মাস আগে ৭২-৭৫ টাকা ছিল। নাজিরশাইল বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ৮৫-৯০ টাকা, যা আগে ৭৮-৮২ টাকা ছিল। বিআর-২৮ ও পাইজাম কেজি ৬৩-৬৫ টাকা বিক্রি হয়, যা এক মাস আগে ৫৭-৫৮ টাকা ছিল। মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল ৫৩-৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ কাঁচাবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা জামিলুর রহমান বলেন, গত এক-দেড় মাস ধরে সব ধরনের চাল উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। যদিও এ সময় চালের দাম কম থাকার কথা। তবুও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের জিম্মি করে বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে।
মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মিল পর্যায়ে কারসাজির কারণে ভরা আমন মেৌসুমে চালের দাম বেড়েছে। এর ফলে পাইকারি আড়তে দাম বেড়েছে। তাই আমাদের বাড়তি দামে কিনে বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কাওরান বাজার আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল বিক্রেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মিল পর্যায়ে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল ৩৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে; যা দেড় মাস আগে ৩৩০০ টাকা ছিল। এখন বস্তায় ৭০০ টাকা বেশিতে কিনতে হচ্ছে। ভালো মানের প্রতি বস্তা নাজিরশাইল চাল মিল পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৩০০ টাকা, যা আগে ৩ হাজার ৯০০ টাকা ছিল। একটু মাঝারি মানের নাজিরশাইল মিল পর্যায়ে প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ১০০ টাকা; যা দেড় মাস আগেও ৩ হাজার ৬০০ টাকা ছিল। বিআর ২৭-২৮ জাতের চাল বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ টাকা; যা আগে ২৫০০ টাকা ছিল।
এদিন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হয় ৩০ টাকা। শিম বিচিসহ কেজি বিক্রি হয় ৪০ টাকা। আর বিচি ছাড়া ৩০ টাকা বিক্রি হয়। মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা ও শালগম ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। এছাড়া খুচরা বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০-৩০ টাকা; শসা কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, কঁাচামরিচ কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, করলা ৫০-৬০ টাকা, লেবুর হালি ৩০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫০-৬০ টাকা।
এদিন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০-২২০ টাকা বিক্রি হয়। আর সোনালি জাতের মুরগি কেজি ৩৩০-৩৫০ টাকা বিক্রি হয়; যা আগে ৩০০-৩২০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০-৮০০ টাকা। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৩০-১৩৫ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার দোকানে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।