ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেশগুলোতে গ্যাস রপ্তানি কমিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। কোনো কোনটিতে বন্ধ করা হয়েছে গ্যাস রপ্তানি। এ অবস্থায় বেকায়দায় পড়েছে ইইউভুক্ত দেশগুলো। বিশেষ করে আসন্ন শীতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির সুফল সম্পূর্ণভাবে রাশিয়ার অনুকূলে গেছে। রাশিয়া তার প্রাকৃতিক গ্যাস ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে আগামী এক বছরের জন্য বন্ধ রাখতে পারে, তাতে তার অর্থনীতির মারাত্মক কোনো ক্ষতি হবে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত উধৃত করে ব্লুমবার্গ এই খবর দিয়েছে।
গণমাধ্যমটির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, জ্বালানির বর্তমান বাজার মূল্যের কারণে শুধুমাত্র তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে রাশিয়া তার আগের গ্যাস ও তেল বিক্রির সমান অর্থ পাচ্ছে। ফলে আগামী এক বছর পর্যন্ত যদি রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে গ্যাস রপ্তানি না করে তাহলেও তাতে জাতীয় অর্থনীতির কোনো ক্ষতি হবে না। শুধু তাই নয়, আগামী তিন বছর পর্যন্ত রাশিয়া ইউরোপে মাত্র শতকরা ২০ ভাগ গ্যাস রপ্তানি করে তার অর্থনীতিকে ভালোভাবে টিকিয়ে রাখতে পারবে।
এছাড়া বর্তমানে রাশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার পরেও তৃতীয় প্রান্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে মস্কোর আয় হবে দুই হাজার কোটি টাকা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের নেতারা বারবার সতর্ক করে বলছেন যে, রাশিয়া তার গ্যাস সম্পদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে রাশিয়া এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
রাশিয়ার দাবি, কারিগরি ত্রুটির কারণে সম্প্রতি ইউরোপের দেশগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে তারা। এতে গ্যাসের দাম আকাশচুম্বি হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট থেকে তিন দিনের জন্য নর্ড স্ট্রিম ওয়ান পাইপ লাইন দিয়ে ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। তাতে গ্যাসের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।