ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। দেশটির পশ্চিম, উত্তরের পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এ হামলা চালানো হয়। শনিবার রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউক্রেনের সরকারি এক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার (২৪ জুন) ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের লুহানস্ক অঞ্চলের সেভেরোদোনেৎস্ক ও লিসিচানস্ক শহরে ব্যাপক হামলা শুরু করে রুশ সামরিক বাহিনী। শহর দুটি নিজেদের দখলে নিতে ব্যাপক গোলাবর্ষণের পাশাপাশি বিমান হামলা জোরদার করে রাশিয়া।
তিনি আরও জানান, রাশিয়ার হামলায় উক্ত এলাকার একটি রাসায়নিক কারখানা ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে শহরের শত শত বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়েছেন।
সেভেরোদনেৎস্কে রাশিয়ার হামলা তীব্র হওয়ায় নিজ সৈন্যদের উক্ত শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন সরকার। শহরটি রক্ষা করার মতো খুব বেশি কিছু না থাকায় সৈন্যদের ফিরতে বলেছে ইউক্রেন। গত মে মাসে মারিউপোল শহরের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর সেভেরোদনেৎস্কে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলো ইউক্রেনের সৈন্যরা।
টুইটারে দেয়া এক বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেন, রাতভর পুরো ইউক্রেনে ৪৮টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রুশ সৈন্যরা। রাশিয়া এখনও ইউক্রেনকে ভয় দেখাতে, আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, সেভেরোদোনেৎস্কের দখল নিতে কয়েক মাস ধরে তুমুল লড়াই চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় বাহিনীর। দুই পক্ষের লড়াইয়ে শহরটির ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধ্বংস হয়েছে নানা অবকাঠামো।
রাশিয়ার সাম্প্রতিক এই অভিযানে লুহানস্কের পুরো নিয়ন্ত্রণ মস্কোর হাতে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের লিসিচানস্ক শহর রাশিয়ার পরবর্তী লক্ষ্য হতে পারে।
এদিকে পশ্চিমা মিত্রদের কাছে আরও অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির শীর্ষ কমান্ডার ভ্যালেরি জালুঝনি বলেন, লুহানস্কের পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের আরও অস্ত্র প্রয়োজন।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা ইতালির এক সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, গত ৯ মে পুতিন দনবাস দখলের কথা বলেন। ২৪ জুন পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়েছি। কয়েকটি এলাকা থেকে সেনাদের পিছু হটা মানে যুদ্ধে হেরে যাওয়া নয়।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার চার মাস গড়িয়ে পাঁচ মাসে পড়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হয়। রাশিয়ার চলমান এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যুদ্ধে প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও টাল-মাটাল অবস্থা বিরাজ করছে।