এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদ। এই ঈদের আনন্দ করতে চায় সব ধরণের মানুষ। সমাজের সব শ্রেনীর মানুষ আনন্দ করতে চাইলেও সামর্থগত কারণে অনেকেই এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। এই সকল মানুষের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে এগিয়ে এসেছে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের একঝাঁক তরুণ। তারুণ্যের শক্তি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, শিমুলিয়া বরাবরের মতো এবারও নিজেদের এবং সংগঠনের অভিভাবকদের প্রদেয় তহবিল দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের সাথে।
২৭ রমজান ও ২৮ রমজান তারা এ উপহার পৌঁছে দিয়েছে তুলনামূলক কম স্বাবলম্বী পরিবারের মাঝে । উপহারের মধ্যে ছিল চাল,ডাল, সেমাই, চিনি, কনডেন্স মিল্ক, কিসমিস ও সাবান।
করোনা কালীন সময় থেকে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এই তারুন্যে ভরা সংগঠনটি। মূলত ছোট একটি খেলার মাঠ কেন্দ্রীক এ সংগঠনটি তাদের যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের শেষের দিকে।স্কুলের (পূর্বাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) সে খেলার মাঠটি না থাকলেও(অপরিকল্পিত প্রাচীর নির্মাণের জন্য) তাদের ভালো কাজগুলো আজও রয়ে গেছে। বিভিন্ন সচেতনতা তৈরি,মাদক ও যৌতুক বিরোধী কার্যক্রম, দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো,ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো সহ বিভিন্ন সমাজ সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলেছে এ সংগঠনটি।
সংগঠনের উদ্যোগতা কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা ওই এলাকার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি মাঠ প্রতিষ্ঠার জন্য এখনও লড়ে যাচ্ছে। সমাজের বিত্তবান ও উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে তাদের এ মহৎ উদ্যোগে পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন এই উদ্যোগতারা। তাতে অন্তত মাদকদ্রব্যের এই করাল থাবা থেকে একটি প্রজন্ম,একটি সমাজ ও একটি এলাকা রক্ষা পাবে।
সংগঠনটির মুখপাত্র মোঃ সেলিম রেজা বাপ্পী’র সাথে কথা বলে জানা যায় “আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু হলেও আল আমিন হোসেন (বিল্লাল), রাশেদ মাহমুদ, রাসেল রেজা, রোকন হোসেন, আশিকুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, সুজন হোসেন, আশরাফুল আলম সহ আমাদের কার্যক্রম অনানুষ্ঠানিক ভাবে আগে থেকেই চলমান ছিল। বড় ভাইদের নেতৃত্বে আমরা আগেও অনেক কাজ করেছি । এখন আমি আছি আর আমাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দেবার মত যারা আছে তারাও খুবই সাংগঠনিক এবং উচ্চমানের সমাজ সচেতন। আর আমাদের অভিভাবক ও উপদেষ্টা মণ্ডলীর দিকনির্দেশনা ও স্নেহপরায়ন মনোভাব হয়ত আমাদের চাওয়ার চেয়ে অনেক বেশি। খেলার মাঠ নষ্ট হলেও অনেক পরিশ্রমের ফলে এখনও আমরা এলাকা মাদক ও ডিজিটাইজেশনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখতে পেরেছি তবে হয়ত পরবর্তী প্রজন্মের কাছে খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকা ও মোবাইল গেমসের থাবা, ইন্টারনেটের ক্ষতিকর সাইটগুলো ও মাদকের সহজলভ্যতার ফলে মাদকমুক্ত রাখার কোন সুযোগ থাকবে না। সুন্দর চরিত্র গঠন, শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখা, মানসিক বিকাশ, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি সর্বোপরি সুন্দর একটি আগামী গঠনে আমরা অতিসত্বর একটি মাঠের ব্যবস্থা করার বিকল্প দেখছি না। ”
ভবিষ্যতে যেন আরো বেশি বেশি ভালো কাজ করতে পারে ও অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সাথে নিজেদের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করতে পারে সেজন্য সবার নিকট দোয়া চেয়েছেন তারা।