স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে চলমান ন্যাটো জোটের শীর্ষ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন পুরো ইউরোপের স্থল, আকাশ এবং সমুদ্র জুড়ে আমেরিকান সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউরোপের ‘শান্তি’ ধ্বংস করে দিয়েছেন বলেই আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত।
বাইডেনকে উদ্ধৃত করে মার্কিন টিভি নেটওয়ার্ক সিএনএন জানাচ্ছে, পোল্যান্ডে মার্কিন সেনাবাহিনীর ‘ফিফথ কোর’ সেনাদলের একটি স্থায়ী সদর দপ্তর তৈরি করা হবে। রোমানিয়াতে আরো তিন হাজার সৈন্য মোতায়েন করা হবে। বাল্টিক দেশগুলোতে আমেরিকার সৈন্য সংখ্যা বাড়ানো হবে।
শুধু পূর্ব ইউরোপই নয়, পশ্চিম ইউরোপেও আমেরিকার সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন।
ব্রিটেনে সর্বাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমানের আরো দুটো স্কোয়াড্রন মোতায়েন করা হবে। সেইসাথে, ইটালি এবং জার্মানির বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হবে।
সেইসাথে ইউরোপে মার্কিন নৌ-বাহিনীর শক্তি বাড়াতে স্পেনের রোটা ন্যাভাল স্টেশনে আরো দুটো ডেস্ট্রয়ার পাঠানো হবে।
ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টোলটেনবার্গের সাথে বুধবার এক বৈঠকের পর বাইডেন বলেন, ‘মিত্রদের সাথে মিলে আমরা নিশ্চিত করবো যে কোনো জায়গায় যে কোনো ধরণের হুমকি মোকাবেলায় ন্যাটো প্রস্তুত’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
তুরস্ক আপত্তি তুলে নেওয়ার পর ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের এই জোটের যোগ দেওয়ার পথে বাধা উঠে যাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘ঠিক এই বিষয়টিই পুতিন কখনোই চাননি…কিন্তু ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য ঠিক এটাই এখন জরুরি,’ বলেন বাইডেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ন্যাটো জোটের শক্তি বাড়াতে যে পরিকল্পনা করা হচ্ছে- শীতল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর তার নজির আগে আর দেখা যায়নি।
ন্যাটো সৈন্য মোতায়েন দশগুণ বাড়বে
ন্যাটো শীর্ষ বৈঠক শুরুর ঠিক আগে সোমবার জোটের মহাসচিব ইয়েন্স স্টেfলটেনবার্গ বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য সর্বদা প্রস্তুত’ এমন সৈন্য সংখ্যা বর্তমানের ৪০ হাজার থেকে প্রায় দশগুণ বাড়িয়ে তিন লক্ষাধিকে নেওয়া হবে।
নতুন এই কৌশলগত পরিকল্পনা মাদ্রিদের এই শীর্ষ সম্মেলনে অনুমোদিত হতে পারে।
স্টোলটেনবার্গ বলেন, ন্যাটোর এই ‘র্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্স’ হচ্ছে স্থল, নৌ ও বিমান সেনা ও সরঞ্জামের সমন্বয়ে তৈরি করা একটি বাহিনী- কোনও আক্রমণ হলে যাদেরকে দ্রুতগতিতে মোতায়েন করা যাবে। ২০১৪ সালের আগে এ বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল ১৩,০০০ – আর এখন তা বেড়ে ৪০,০০০ হয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ অভিযানের পর ইতোমধ্যেই লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ডে মোতায়েন ন্যাটো সৈন্যদেরকে ‘উচ্চ-প্রস্তুতিমূলক অবস্থায়’ রাখা হয়েছে।