বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, সাধারণ মানুষের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের সুবিধার্থে আমরা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছি। বিভিন্ন পয়েন্টেও আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকারের নির্দেশনা টানিয়ে দিয়েছি।
এছাড়াও বিভিন্ন পরিকল্পনা করে কোন বিভাগের গাড়ি কোথায় পার্কিং করা থাকবে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা, কোন রাস্তা কখন খোলা বা কখন বন্ধ থাকবে সে নির্দেশনা দিয়েছি। পকেটমারসহ নানা অপরাধ কার্যকলাপ রুখতে আমাদের পেট্রল টিম কাজ করবে। আমরা ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবো। সাদা পোশাক ও পোশাকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় গাজীপুরের টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠ পরিদর্শনে এসে ইজতেমা মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইজতেমার জন্য ১৬০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা ময়দানের নানা উন্নয়নকাজ করছেন।
‘বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লি যারা আসেন তাদেরকে এয়ারপোর্টে আয়োজকরাই রিসিভ করে থাকেন। বিদেশি মুসল্লিরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে আসতে পারেন সে জন্য ইমিগ্রেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে, যাতে তারা সুন্দরভাবে আমাদের দেশে আসতে পারেন। ইমিগ্রেশনে যেন কোন জটিলতার সম্মুখীন হতে না হয়। আসার পথে তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে সুগম হয় সে জন্য আমরা ব্যবস্থা রেখেছি। তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত টুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত থাকবে বলে।’
তিনি আরও বলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে। র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে, ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলবে, এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভারভেশন টিম থাকবে, র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রল টিম, বোম ডিস্পোজাল টিম থাকবে। মোনাজাতের দিন সুষ্ঠুভাবে আখেরি মোনাজাত ও জুম্মার নামাজ যাতে মুসল্লিরা সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে সে জন্য সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই আপনারা নির্ভয়ে নিরাপদে ইজতেমায় অংশ নিতে পারেন।
ইজতেমা স্থলে যে ৯১টি খিত্তায় বিভক্ত, খিত্তাভিত্তিক আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’র পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, স্পেশাল ব্রাঞ্জ, সিআইডি, নৌপুলিশ, এন্টি-টেররিজম ইউনিট, রেলওয়ে পুলিশ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এর সাথে সরকারের অন্যান্য বিভাগও সমন্বিত ভাবে কাজ করছে। আমরা এক সাথে সবাই মিলে একযোগে কাজ করছি, যাতে মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণভাবে এই আয়োজনে শরিক হতে পারে এর জন্যই আমরা সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছি। আমাদের আশা ইতিপূর্বে আমরা যেভাবে সফলভাবে হয়েছি, এর ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা এই আয়োজন সফল করবো। ইতিমধ্যেই আমাদের ফোর্স আসা শুরু হয়েছে, আগামীকাল থেকে পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাজ শুরু হবে।
পরে আইজিপি ইজতেমা মাঠ পরিদর্শন করেন। এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি টুরিস্ট পুলিশের প্রধান হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন ও গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।