নিজস্ব প্রতিবেদক
যারা মুক্তিযুদ্ধ করতে পারেননি কিন্তু দেশের ভিতর অবদান রেখেছেন তাদেরই একজন বেগম নুরজাহান। খুব সাধারণ মানুষ নন, তিনি আলোকিত মানুষ। তিনি দেশের প্রয়োজনে ঝুঁকি নিয়েছেন এবং নিতে পারেন। একাত্তরে আমি গ্রন্থটি একটি সুখপাঠ্য ইতিহাস গ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ করে কু্ষ্টিয়ার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিলের অংশ ও উপকরণ বেগম নুরজাহানের এই গ্রন্থ। রিসার্চ সেন্টার কুষ্টিয়ার আয়োজনে রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নারীনেত্রী ও বিশিষ্ট লেখক বেগম নূরজাহানের ‘একাত্তরে আমি’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শিশির কুমার রায়। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আজকে যাদের এই মঞ্চে উপস্থিত করা হয়েছে তারা সবাই কিংবদন্তি জীবন্ত ইতিহাস। তাদেরকে সম্মানিত করতে পেরে আমি নিজেকে গর্বোবোধ মনে করছি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো বলেই আজ আমি অধ্যক্ষ হতে পেরেছি। এই কলেজে ইতিহাস ঐতিহ্যের কলেজ, আপনাদের প্রতিষ্ঠান।
০৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক লাউঞ্জে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রিসার্চ সেন্টার, কুষ্টিয়া নামের সংগঠন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি কুষ্টিয়া জজকোর্টের জিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আসম আখতারুজ্জামান মাসুম বলেন, আমরা একাত্তর সালে বিভিন্ন গ্রামে বিভিন্ন মানুষের কাছে যে সহযোগিতা পেয়েছি তা ভুলবার নয়। সে ইতিহাস ওইভাবে লেখা হয়নি। এদেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশকে আগলে রেখেছেন কিভাবে সেটা জানতে হলে নারীনেত্রী বেগম নূরজাহানের ‘একাত্তরে আমি’ গ্রন্থ পড়তে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ আরা বেগম রুমী বলেন, আমার বাবা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। আমি নিজে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। একাত্তর সালে আমার বাবা শহিদ হন স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে। একাত্তর সালে একটি নারীর জীবন ও অবরুদ্ধ একাত্তরকে জানতে হলে বেগম নূরজাহানের “একাত্তরে আমি” গ্রন্থ পড়তে হবে।
রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মোছা. ইসমত আরা খাতুন বলেন, নারী দিবসে এমন একজন গুণী নারীর লেখা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা এবং আমাকে আমন্ত্রণ করার জন্য রিসার্চ সেন্টারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এইসকল গুণী মানুষদের সান্নিধ্যে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অনুষ্ঠানে গ্রন্থের উপর আলোচনা করেন লেখক গবেষক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী ইমাম মেহেদী।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মো. আশরাফ আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মো. কবিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে লেখিকার জীবনী পাঠ করেন কবি ও আবৃত্তিকার শাহিদা পারভীন রেখা।
অনুষ্ঠানে রিসার্চ সেন্টারের পক্ষ থেকে আলোকিত তিন নারী বেগম নূরজাহান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ আরা বেগম ও ড. মোছা. ইসমত আরা খাতুনকে ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে সম্মান জানানো হয়।