ইমামের মেয়ের প্রেমের টানে নাটোরে চীনা যুবক

বাংলাদেশি তরুণীর প্রেমের টানে নাটোরে এসেছেন চীনের সাং সাইয়ের বাসিন্দা চিকিৎসক লি সি জাং। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে স্থানীয় মসজিদের ইমামের মেয়েকে বিয়ে করেছেন। প্রায় ৬ মাস মোবাইল অ্যাপের (উই চ্যাট) মাধ্যমে নাটোরের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে আগে পরিচয় হয় তার। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব। তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে নাটোরে এসে প্রেমিকা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেছেন লি সি জাং। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

রোববার (২৩ জুন) নাটোরের আদালতে বিয়ে রেজিস্ট্রারি করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৭ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে মুসলিম রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়। নববধূ ফাতেমা নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের আবু তাহেরের পঞ্চম কন্যা ও নাটোর নবাব সিরাজ -উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ফাতেমার বাবা আবু তাহের স্থানীয় কাঁঠালবাড়িয়া মসজিদের ইমাম।

ফাতেমার পারিবারিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশি তরুণীর ভালোবাসা পেতে নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন চীনা যুবক লি সি জাং। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে চীন থেকে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের ফাতেমাদের বাড়িতে আসেন লি সি জাং। এসে সবার সামনে বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করেন। নিজের নতুন নাম রাখেন আলী। পরে মুসলিম রীতি অনুসারে ফাতেমাকে বিয়ে করেন।

স্বামীর সঙ্গে চীন চলে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে নববধূ ফাতেমা বলেন, আমাকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছে। সে আমার জন্য তার নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই।

অন্যদিকে, নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে লি সি জাং ওরফে আলী বলেন, এ বিয়েতে আমি খুব খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছি। আমি আশাবাদী আমার ভালোবাসার মানুষ সারাজীবন আমার পাশে থাকবে।

ফাতেমা খাতুনের বাবা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে বিদেশি পুরুষকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই স্থানীয় ভাবে বিয়ের প্রস্তাব এলেও সে রাজি হয়নি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছে তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিয়ে পড়ানো হয়েছে। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রোববার আদালতের মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়।

রোববার সকালে আদালতে চীনা যুবক লি সি জাংয়ের ধর্ম পরিবর্তনের এফিডেভিট ও বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালত চত্বরের কাজি ও জেলা কাজি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ রিয়াজুল হক মমিন।