স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের সামনে যে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো আসবে তা মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশন হবে। তাই এখন থেকে এ নিয়ে কাজ করতে হবে। সেখানে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে ও যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে তার বিষয়ে এখন থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সেইসঙ্গে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে অল্প টাকা দিলে কাজ শেষ হবে সেসব প্রকল্পে দ্রুত বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলো জানান সত্যজিত কর্মকার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার, কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য আবদুল বাকী, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. মোহাম্মদ ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বিষয়ে সত্যজিত কর্মকার বলেন, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের গ্রাজুয়েশন হবে। সেখানে যে সুবিধাগুলো আমরা পাবো তা নিয়ে এখন থেকেই কাজ করতে বলেছেন। সেসব চ্যালেঞ্জ আসবে তা কীভাবে মোকাবিলা করা হবে সে বিষয়ে কার্যকরি উদ্যোগ নিতে বলেছেন।
তিনি নিজে কিছু প্রকল্প নিয়ে বসেছিলেন। সেখানে প্রকল্পের কর্ণধার ও পিডিরা ছিলেন। এসব প্রকল্পে তিনি দেখেছেন অল্প কিছু টাকা দিলে এগুলো শেষ করা যায়। সেজন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে টাকা দিয়ে প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করা হয়। সচিব বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে টাকা দেব, যাতে দ্রুত প্রকল্পগুলো শেষ হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে মিশরে যে চ্যান্সারি ভবন তৈরি হবে সেখানে প্রবাসীদের জন্য ওয়েটিং রুম, ওপেন স্পেস রাখতে বলা হয়েছে। সেখানে বুথ করে দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, প্রবাসীরা যাতে সেবা নিতে এসে কোন ধরনের কষ্টের শিকার না হন। যাতে একাধিক সেবা এক জায়গা থেকে নিতে পারেন। ডিজাইনে এসব সংযোজন করতে হবে।
রংপুরের একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কুড়িগ্রাম পিছিয়েপড়া একটি অঞ্চল। কুড়িগ্রামের উন্নয়নে বিশেষ নজর দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তিনি বলেছেন, বড় প্রকল্পের সঙ্গে রাস্তাঘাট, ব্রিজ ইত্যাদি যুক্ত করতে হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কুড়িগ্রামকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কেননা ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ নদী ভাঙ্গনে কষ্টে আছে।
ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের একটি প্রকল্প পাস হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দ্রুত সময়ে বাংলাদেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। ১৯৯৬ সালে তিনি কাজটি শেষ করলেও এখনও অনেক কমপ্লেক্স নির্মাণ বাকি আছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে আশস্ত করেছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবেন। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের কমপ্লেক্সগুলোতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে ও সোলারের ব্যবস্থা রাখা হয়।
তাঁত বোর্ডের একটি প্রকল্প ছিল। সেখানে তিনি মেয়েদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে বলেছেন। ক্যান্সার হাসপাতালের প্রকল্প পাস করে দিয়েছেন। তবে সেখানে কিছু সমস্যা আছে তা সমাধানের নির্দেশনা দিয়েছেন।