সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি(এনআইএফটি) এর AMT(Apparel Manufacturing And Technology) ও FDT(fashion design and technology) বিভাগের শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলন অনুষ্ঠান এক উৎসবমুখর আয়োজনে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির মহাখালী ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
নানা আয়োজনে মুখর করে বর্তমান ও প্রাক্তন-প্রাক্তনীদের অনন্য স্মরণীয় দিন হিসেবে উপহার দেওয়ার চেষ্টা ছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের। এ পুনর্মলিনী বর্তমান শিক্ষার্থী ছাড়াও সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেয়। সাবেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙা বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ মিলেছিল এই আয়োজনে।
২৫ নভেম্বর সকালে AMT ও FDT বিভাগের সমন্বয়কারী মোহাম্মদ শামছুল আলমের শুভেচ্ছা বক্তব্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে তিনিই উপস্থাপকের ভূমিকা পালন করেন।
ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি(এফডিটি) বিভাগের প্রধান মো. আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবুল বাশার। বিশেষ অতিথি হিসেবে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শামীম আরা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
এসইউ এবং এনআইএফটির এএমটি ও এফডিটি বিভাগের উৎসবমুখর পুনর্মিলনী
এই পুনর্মিলনীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মো. আল-আমিন মোল্লা, রেজিস্ট্রার এস. এম. নুরুল হুদা, কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ এ মাবুদ, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আলমগীর হোসেন, ব্যবসায় অনুষদের ডিন প্রফেসর আবুল কালাম, ছাত্র কল্যাণ বিভাগের পরিচালক কাজী জুলকারনাইন সুলতান আলম।
আলোচনা পর্বে রেজিস্ট্রার এস. এম. নূরুল হুদা বলেন, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোয়ালিটি এডুকেশন প্রোভাইড করার পূর্বশর্ত হচ্ছে কোয়ালিটি সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ করা। সে আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রণীত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী অত্র ইউনিভার্সিটির শিক্ষক নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে ভালো রেজাল্ট করা যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করে থাকেন। ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে ভালো শিক্ষক এবং শিক্ষার গুণগত মান’।
ট্রেজারার অধ্যাপক মো. আল-আমিন মোল্লা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মহামারির পর আমাদের ক্যাম্পাসে আবার সহ শিক্ষা কার্যক্রমগুলো শুরু হয়েছে। আমি আশা করছি এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে আলো ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হব। ইনশাআল্লাহ্ সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভালো করবে।’
এসইউ’র প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর শামীম আরা হাসান বলেন, আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে নবীনদের নিয়ে। নবীনদের পথচলায় আমরা সাথে থাকবো। সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সাথে তার পুরনো সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আমি সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির সাথে আছি। এই ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগ গড়ে তোলার সাথে আমার ভূমিকা ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। এই সময়ে সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ বেশকিছু জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছে এবং প্রত্যাশা করি এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতেও জিতবে। তিনি অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড, ক্যামব্রিজের মতো উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন বলে তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এ স্বপ্নের সাথে এএমটি ও এফডিটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা কীভাবে জড়িয়ে আছে তিনি সেটিও ব্যক্ত করেন। প্রফেসর শামীম আরা হাসান, নবীন ও উদীয়মান শিক্ষার্থীদের চারটি বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। সেগুলো হলো: মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা, মানবিক গুণাবলীর অনুশীলন করা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, উচ্চশিক্ষা শেষ করে চাকরি করা বা উদ্যোক্তা হতে আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া।
সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: আবুল বাশার এএমটি ও এফডিটি বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, সকল বিভাগের শিক্ষকগণ তোমাদের কাছে থেকে সম্মান পাওয়ার যোগ্য। তাই সবাইকে সম্মান করতে হবে। শিক্ষকবৃন্দ তাদের মেধা দিয়ে দেশের চাহিদা অনুসারে ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন। শিক্ষকদের এই আন্তরিক প্রচেষ্টা বিশ্বের সকল প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে সাহায্য করবে। তিনি মনে করেন, কোনো বিষয়ে দক্ষতা আর সনদ অর্জন এক জিনিস নয়। তিনি দক্ষতা অর্জনের জন্য ক্লাসের বাইরেও শিক্ষকদের সাহায্য নিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানের সভাপতি ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড টেকনোলজি(এফডিটি) বিভাগের প্রধান মো. আহসান হাবীব, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আবুল বাশার, বিশেষ অতিথি প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শামীম আরা হাসান, ট্রেজারার প্রফেসর মো. আল-আমিন মোল্লা, রেজিস্ট্রার এস. এম. নুরুল হুদা, ছাত্র কল্যাণ বিভাগের পরিচালক কাজী জুলকারনাইন সুলতান আলম এবং ইউনিভার্সিটির অনুষদগুলোর ডিন মহোদয়দেরকে উপস্থিত হওয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদেরকে আলোকিত করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আলোচনা সভা শেষে স্মৃতিচারণ, মধ্যাহ্ন ভোজ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় এ আয়োজন।