কক্সবাজারে ১৩ ঘণ্টায় দুই তরুণীসহ তিন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ বুধবার (১৮ মে) রাতে জেলার ইনানীর হোটেল সি-গালে মো. মনিরুল ইসলাম (৪০) নামে এক পর্যটক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের মারা যান।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সি-গাল হোটেলের ৭২৪ নম্বর কক্ষে ওঠেন মনিরুল ও এক নারী। সেখানে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অসুস্থবোধ করলে পর্যটক মনিরুলকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে রাত ১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় স্ত্রী পরিচয়ে তার সঙ্গে থাকা নারীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
গত ১৩ ঘণ্টায় দুই নারীসহ তিন পর্যটকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের রয়েল টিউলিপে অবস্থান নেওয়া মাফুয়া খানম নামে এক নারী অসুস্থ হলে হাসপাতালে আনার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্বামী পরিচয়ে সঙ্গে আসা নাছির উদ্দিন নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে বুধবার দুপুর পৌণে ১টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান এক পর্যটক তরুণী। গত ১১ মে ঢাকা থেকে চার বন্ধুর সঙ্গে ওই তরুণী কক্সবাজার বেড়াতে এসে হোটেল বিচ হলিডেতে উঠেন। ১৪ মে সকালে সেখানে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে বন্ধুরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বুধবার তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সঙ্গে আসা ৪ বন্ধুর মধ্যে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, অতিরিক্ত মদ্যপানে এ তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজারে অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হওয়া দু’ই তরুণীর অভিভাবকরা বাদী হয়ে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেছেন। যার মধ্যে হোটেল বিচ হলিডেতে অবস্থানকারী লাবণী আকতারের (১৯) মৃত্যুর ঘটনায় তার পিতা মনির হোসেন বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ওই তরুণীর পিতা মামলাটি দায়ের করেন। যেখানে চার জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে যাত্রীবাড়ি এলাকার মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে কামরুল আলম (২০) ও আবদুর রহমানের ছেলে আরিফ রহমান নিলু (২১) আটকের পর ৫৪ ধারায় কারা হেফাজতে রয়েছেন। এ ঘটনায় পালাতক রয়েছেন আরো দু’জন।
তারা হলেন, শরিয়তপুর জেলার নুরিয়া এলাকার মোশারফ হোসেনের ছেলে তানজিল হাসান (২১) ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মাহিম হাসান অনিক (২০)।
ওসি সেলিম জানান, মামলার এজাহারে তার পিতা উল্লেখ করেন- তার মেয়ে এক আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। অভিযুক্ত চারজন কৌশলে তার মেয়েকে কক্সবাজার এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।