করোনা প্রতিরোধে টিকা কেনাকাটা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) দেওয়া তথ্য ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
টিআইবির প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে টিআইবি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে। দেশের স্বার্থে টিআইবির বিরুদ্ধে যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে হয়, সরকার তা–ই করবে।
সোমবার সচিবালয়ে টিআইবির একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ সচিব সাইফুল হাসান বাদল উপস্থিত ছিলেন।
গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে টিআইবি বলেছিল, সরকারের দাবি কোভিড–১৯–এর টিকা কিনতে ৪০ হাজার কেটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু টিআইবির হিসাব বলছে, যে পরিমাণ টিকা কেনা হয়েছে, তাতে খরচ হওয়ার কথা ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মানে ২২ হাজার কোটি টাকার ফারাক রয়েছে।
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা কেনায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। আর যে সাড়ে নয় কোটি ডোজ টিকা আমরা ফ্রি পেয়েছি, সেটার আর্থিক মূল্য আমরা ২০ হাজার কোটি টাকা ধরেছি। এ টাকা আমাদের খরচ হয়নি। আমরা শুধু খরচটা ধরে যোগ করেছি। এমন নয় যে আমাদের ৪০ হাজার কোটি টাকাই খরচ হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টিআইবি মাত্র ১০৫টি সেন্টার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জরিপটি করেছে। তাও টেলিফোনে মাত্র ১ হাজার ৮০০ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে। আমরা টিকা দিয়েছি ১২ কোটি ৮৪ লাখ মানুষকে। কোথায় ১৩ কোটি, কোথায় ১৮০০ মানুষ।’ এত কম মানুষের ওপর জরিপ হয় কীভাবে, সে প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী। টিআইবি বলেছে, টিকা নিতে নাকি গড়ে ৬৭ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। আজকাল ফকিরকেও ৬৭ টাকা দিলে নিতে চায় না।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ টিকা পাওয়া গেছে, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে দেড় কোটি টিকা পাওয়া গেছে। সে পরিমাণ টাকা তাদের পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি দেড় কোটি টিকা পাওয়া যায়নি। তাই টাকাও দেওয়া হয়নি। আর ভারত থেকে ভবিষ্যতে টিকা নেওয়ার ইচ্ছা নেই বলে জানান তিনি। কারণ, সরকারের কাছে যথেষ্ট টিকার মজুত আছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কেনাকাটা পুরোটা স্বচ্ছ। কিন্তু টিআইবি অস্বচ্ছ কাজ করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, টিকা দেওয়া ও করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এক রোলমডেল।