শহিদুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক: ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১৮ই মে এই বিশেষ দিন উদযাপন করা হয় সংস্কৃতি, সাংস্কৃতিক আদান প্রদান, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য। প্রতিটি উন্নত দেশেই মিউজিয়াম বানানোর দিকে জোর দেওয়া হয়ে থাকে। বাস্তবিক, শহরাঞ্চলের সব ছাত্র-ছাত্রীর স্কুল বা কলেজ জীবনের কোন না কোন সময়ে মিউজিয়ামে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র সরকারি নয়, বেসরকারি স্তরেও অনেক মিউজিয়াম হয়ে থাকে। থিম ভিত্তিক মিউজিয়ামের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। ভারত সরকারের অধীনে অনেকগুলো মিউজিয়াম রয়েছে এই মুহূর্তে। বলাই বাহুল্য, ১৮১৪ সালে তৈরি হওয়া কলকাতার ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ভারতীয় উপমহাদেশ তথা এশিয়া প্যাসিফিকের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে বড় মিউজিয়াম। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন ইতিহাসের সাথে আলাপচারিতা করতে।
গত বছর আন্তর্জাতিক মিউজিয়াম দিবসের থিম ছিল ‘The power of museum’— অর্থাৎ মিউজিয়াম কতটা বদল আনার ক্ষমতা রাখে আধুনিক পৃথিবীতে। ইতিহাসকে নতুন আঙ্গিকে জানা যেমন দরকার আবার তার আধুনিকতার মোড়কে – এই দুটোর মেলবন্ধনের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ মিউজিয়াম। অজানার মধ্যে জানার যে মাদকতা রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদি ভারতের কথা বলা হয়, তাহলে দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ামের কথা বলতেই হবে যেখানে ২০০,০০০ টির বেশি সম্পদ রয়েছে প্রাক-ঐতিহাসিক থেকে বর্তমান যুগ অবধি। ভারতে এই মুহূর্তে কম করে ১০০০টির বেশি মিউজিয়াম রয়েছে। সারা পৃথিবীর কথা বললে সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে ৯৫,০০০ এর কাছাকাছি তো হবেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা আমেরিকায় ৩৩,০৮২ মিউজিয়াম রয়েছে, ইউনেস্কোর মতে যা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বলা যেতে পারে। এছাড়া জার্মানি ও জাপানেও অনেক মিউজিয়াম রয়েছে। রাজস্থানের যোধপুর জেলার উমেদ ভবন প্যালেস মিউজিয়াম ভারতের অন্যতম সবচেয়ে ছোট মিউজিয়াম হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। দেখা গিয়েছে যে চন্ডীগড়ের ভিরাসত-ই -খালসা মিউজিয়ামে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসে থাকেন এশিয়ার মধ্যে।
ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ঘুরে বাংলা৫২ নিউজ এর সহকারী সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, কলকাতায় ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম টি অত্যন্ত সুন্দর ও পরিপাটি তথ্য সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা। পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় বাংলাদেশী পর্যটকরা সংখ্যায় অন্যান্য দেশের তুলনায় এই মিউজিয়াম দেখতে বেশি আসেন বলে কর্তৃপক্ষের নিকট জানা যায়।
বিদেশের অনেক মিউজিয়ামের ক্ষেত্রেই আবার ভার্চুয়াল ট্যুরের দিকটি চালু রয়েছে। সশরীরে মিউজিয়াম না গিয়েও স্রেফ নিজের স্মার্টফোন কিম্বা কম্পিউটারের দৌলতে ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে অনেক মিউজিয়ামে। কিন্তু দুধের সাধ কি ঘোলে মিটতে পারে? তাই ভার্চুয়ালি দেখার সুযোগ থাকলেও মিউজিয়ামের ঘ্রাণ নেওয়ার দিকটি একদম অনন্য অভিজ্ঞতা। তাই কমবয়সী ছেলেমেয়েদের জীবনে মিউজিয়ামে যাওয়ার অভিজ্ঞতা একান্তই প্রয়োজন। আর সাথে মাথায় রাখতে হবে যে গ্রামের ছেলেমেয়েরা কি অনেকটাই বঞ্চিত। তাই স্কুল বা কলেজ ম্যানেজমেন্টকে এই নিয়ে দায়িত্ব সহকারে ব্যবস্হ করতে হবে।