কাতারে ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালিত
কাতারের দোহাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযোগ্য মর্যাদা ও গাম্ভীর্যের সহিত অদ্য ০৫ আগষ্ট ২০২৫ ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালন করে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ হযরত আলী খান এর সভাপতিত্বে দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে কাতার প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ, রেমিট্যান্স যোদ্ধা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজ এর প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থী এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এরপর জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জুলাই-আগষ্ট অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহিদ, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী সকলের স্বাভাবিক ও সুস্থজীবন এবং দেশ ও জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান জনাব মোঃ ওয়ালিউর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। অতঃপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয় এবং ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা থেকে প্রেরিত তথ্য চিত্র প্রদর্শণ করা হয়। কাতারস্থ হামাদ বিন খলিফা, দোহা, কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান দিবসটি উপলক্ষ্যে মূল প্রবন্ধ (Key Note) উপস্থাপন করেন।
এরপর ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান তাৎপর্যের উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণকালে বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের আত্মত্যাগ সম্মানের সহিত স্মরণ করে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সকলে এক সাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ কবিতা ও গান পরিবেশন করেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোহাম্মদ হযরত আলী খান তাঁর বক্তব্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস এর তাৎপর্য আলোচনাকালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ও একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অন্তরবর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদান কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করেন। অতঃপর তিনি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্য এবং ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য সকলকে আহবান জানান। পরিশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে দেশীয় খাবার পরিবেশনার মাধ্যমে আপ্যায়িত করা হয়।